জার্মান রাষ্ট্রদূত মনে করেন ট্রাম্প `প্রতিশোধপরায়ন` : প্রতিবেদন
রাজনীতি ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৬:২৯, ২০ জানুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ১৬:৩১, ২০ জানুয়ারি ২০২৫
ট্রাম্পের নীতিকে যুক্তরাষ্ট্রের সাংবিধানিক শৃঙ্খলার প্রতি সরাসরি হুমকি মনে করেন জার্মান রাষ্ট্রদূত।
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে 'প্রতিশোধপরায়ন' বলে মনে করেন দেশটিতে নিযুক্ত জার্মানির রাষ্ট্রদূত আন্দ্রেয়াস মাইকেলিস।
এক তারবার্তায় তিনি সতর্ক করে বলেছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প গণতন্ত্রের অবমূল্যায় করবেন। এ ছাড়াও তিনি শঙ্কা জানিয়ে উল্লেখ করেছেন, ট্রাম্প আইনপ্রণেতা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কেড়ে নেবেন।
জার্মানির নানা গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, আন্দ্রেয়াস মাইকেলিস সম্প্রতি লিখিত এক কূটনৈতিক বার্তায় এমন উদ্বেগ জানিয়েছেন। এতে তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা নেওয়ার পর ট্রাম্প ও তার সহযোগীদের ব্যাপারে নানা আশঙ্কার কথা জানান।
মাইকেলিসের ওই বার্তা গতকাল রবিবার প্রথম হাতে পায় জার্মান বার্তা সংস্থা ডিপিএ। এরপর খুব দ্রুতই এটি বিল্ডসহ অন্যান্য সংবাদমাধ্যমের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।
পাঁচ পৃষ্ঠার ওই লিখিত বার্তাটি তিনি গত সপ্তাহে জার্মানির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজের দপ্তরে পাঠান।
এতে তিনি উল্লেখ করেন, দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণ যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে বর্ণিত গণতান্ত্রিক ভারসাম্যের ব্যবস্থার জন্য বড় হুমকি।
মাইকেলিসের আশঙ্কা
যুক্তরাষ্ট্রে গণতন্ত্রের ভবিষ্যতের ব্যাপারে উদ্বেগ জানিয়ে মাইকেলিস ওই বার্তায় উল্লেখ করেন, 'মৌলিক গণতান্ত্রিক নীতিমালা, এবং ক্ষমতার ভারসাম্য যতোটা বেশি সম্ভব অবমূল্যায়নের শিকার হবে। আইনসভা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়ার পাশাপাশি রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হবে। এর পাশাপাশি, বড় প্রযুক্তিনির্ভর প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষমতার অংশীদার হয়ে উঠবে।'
বার্তায় মাইকেলিস আরো লিখেছেন, তিনি মনে করেন কংগ্রেস ও রাজ্যগুলোর কর্তৃপক্ষদের উপেক্ষা করে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের হাতে সর্বোচ্চ ক্ষমতা কেন্দ্রিভূত করবেন।
তিনি আরো লিখেছেন, ট্রাম্পের নীতি প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক ব্যবস্থা ও আমলাতান্ত্রিক কাঠামোকে সর্বোচ্চ পরিমাণে নষ্ট করবে। এর পাশাপাশি, তার (ট্রাম্প) 'প্রতিশোধের পরিকল্পনা' সাংবিধানিক শৃঙ্খলার বিদ্যমান চেহারাকেও আমূল বদলে দেবে।
ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকাকালে দেশটিতে জার্মানির প্রতিনিধিত্ব করবেন মাইকেলিস। ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের আগে লেখা ওই বার্তায় তিনি জানান, তিনি (মাইকেলিস) মনে করেন নতুন প্রেসিডেন্ট প্রতিশোধের দ্বারা পরিচালিত এবং তিনি (ট্রাম্প) যুক্তরাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক নীতিমালাগুলোর কারণে দেশটিকে কষে চড় লাগাবেন।
জার্মানির প্রতিক্রিয়া
রাষ্ট্রদূতের এমন বার্তার সত্যতার ব্যাপারে রাষ্ট্রীয়ভাবে সুনির্দিষ্ট কোনো মন্তব্য করেনি দেশটি। বার্লিনে জার্মানির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, তাদের নিজেদের নথিপত্র, বিশ্লেষণ বা দূতাবাসের প্রতিবেদন নিয়ে তারা কোনো মন্তব্য করে না। তাই ওই তারবার্তার ব্যাপারে তাদের কোনো মন্তব্য নেই উল্লেখ করে মন্ত্রণালয় স্পষ্ট বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র (তাদের) 'গুরুত্বপূর্ণ মিত্র'।
তারা আরো উল্লেখ করেছে, জার্মানি ও ইউরোপের স্বার্থে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে আগ্রহী বার্লিন।
সূত্র : ডয়চে ভেলে।