রাজনীতি

মার্কিন নির্বাচন ২০২৪

নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রবাসী

রাজনীতি ডেস্ক

প্রকাশিত: ২২:৩৫, ৫ নভেম্বর ২০২৪;  আপডেট: ২৩:৪৬, ৫ নভেম্বর ২০২৪

নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রবাসী

আজ মঙ্গলবার প্রথম ভোট গ্রহণ শুরু হয় যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলিনা অঙ্গরাজ্যে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হলো বহুল প্রতীক্ষিত জাতীয় নির্বাচন। আজ মঙ্গলবার সকালে দেশটির ভোটারদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে ভোটকেন্দ্রগুলো। এর পরপরই ভোটকেন্দ্রগুলোতে যেতে শুরু করেছেন ভোটাররা। যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে নিবন্ধিত ভোটারের সংখ্যা প্রায় ১৬ কোটি ১০ লাখ। এর মধ্যে প্রায় ৭ কোটি ৫০ লাখের মতো ভোটার ডাকযোগে তাদের ভোট দিয়েছেন।

এদিকে, সময়ের ভিন্নতার কারণে দেশটির বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে ভোট দেওয়ার শেষ সময়ও বিভিন্ন। এরমধ্যে ক্যালিফোর্নিয়ার মেইনল্যান্ডে ভোটকেন্দ্রগুলো বন্ধ হবে স্থানীয় সময় রাত আটটায়। অন্যদিকে, হাওয়াই ও আলাস্কায় কেন্দ্রগুলো খোলা থাকবে আরও কিছু সময়।

তবে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বহু পুরোনো প্রথা অনুযায়ী মঙ্গলবার দিবাগত রাতে প্রথম ভোট অনুষ্ঠিত হয় অঙ্গরাজ্য নিউ হ্যাম্পশায়ারের ছোট মফস্বল শহর ডিক্সভিল নচে। যুক্তরাষ্ট্রের উত্তরপূর্বাঞ্চলে কানাডা সীমান্তের কাছে অবস্থিত অঙ্গরাজ্যটির এ শহরটিতে ১৯৬০ সাল থেকে এ প্রথা চলে আসছে।

এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক দল থেকে বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ও বিরোধী রিপাবলিকান দল থেকে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

নির্বাচনে ভোটাররা একইসঙ্গে দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করতেও ভোট দিচ্ছেন। এক্ষেত্রে, ডেমোক্রেটিক দল থেকে টিম ওয়ালজ ও রিপাবলিকান থেকে জেডি ভ্যান্স প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এদিকে, ভোটের আগের দিন গতকাল সোমবার রাত পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচারণা চালান প্রার্থীরা। এর মধ্যে পেনসালভানিয়া অঙ্গরাজ্যের মধ্য দিয়ে তার ১০৭ দিনের প্রচারণা কার্যক্রম শেষ করেন হ্যারিস। অন্যদিকে, মিশিগানে তার প্রচারণা শেষ করেন ট্রাম্প। এর আগে তিনবারই এ অঙ্গরাজ্যের মধ্য দিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা শেষ করেছিলেন তিনি।

এবারের নির্বাচনী প্রচারণায় হ্যারিস নির্বাচিত হলে গর্ভপাতের অধিকার রক্ষা ও মধ্যবিত্ত কর্মজীবীদের জন্য খাবার ও বাড়ির দাম কমানোর অঙ্গীকার করেন। অন্যদিকে, সীমান্ত বন্ধ ও বিত্তশালীদের জন্য প্রস্তাবিত কর মওকুফের মতো বিষয়গুলো বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করেন ট্রাম্প।

তবে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে হলে উভয় প্রার্থীকে কমপক্ষে ২৭০টি ইলেকটোরাল ভোট পেতে হবে। এক্ষেত্রে, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ অঙ্গরাজ্য অ্যারিজোনা, জর্জিয়া, নেভাদা, উত্তর ক্যারোলিনা, পেনসালভানিয়া এবং উইসকনসিন প্রার্থীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, এসব অঙ্গরাজ্যের ভোটই তাদের ভাগ্য নির্ধারণ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এ অবস্থায় ভোটের আগে করা বিভিন্ন জনমত জরিপে এবার উভয় প্রার্থীর মধ্যেই জোর লড়াই হবে বলেই আভাস পাওয়া গেছে। এক্ষেত্রে, ভোটের রাতে পেনসালভানিয়া ও নেভাদার মতো সর্বাধিক প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ রাজ্যগুলোই তাদের ভাগ্য নির্ধারণ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে, অঙ্গরাজ্য নিউ হ্যাম্পশায়ারের ডিক্সভিল নচে গতকাল মধ্যরাতেই ভোটের কার্যক্রম শেষ হয়েছে। একইসঙ্গে, সেখানকার ফলাফলও এরইমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। এতে, হ্যারিস ও ট্রাম্প উভয়ই তিনটি করে ভোট পেয়েছেন বলে জানা গেছে। এর মধ্য দিয়ে, এবার প্রার্থীদের মধ্যে জোর প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়েছে বলেই বিশেষজ্ঞরা মতামত দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, মার্কিনীরা এবার শুধু প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করতেই ভোট দিচ্ছে না। বরং একইসঙ্গে, মার্কিন কংগ্রেসে প্রার্থী নির্বাচনে এবং কিছু রাজ্যে গর্ভপাতের অধিকার পেতেও ভোট দিচ্ছে ভোটাররা।

তবে, সব ধরনের নির্বাচনের ফলাফল জানতেই সারা বিশ্বকে অপেক্ষা করতে হবে আরও বেশ কিছু সময়।

সূত্র : সিএনএন, বিবিসি, ডয়চে ভেলে, আল-জাজিরা।