করোনা ও বয়কট বিতর্কের মধ্যেই পর্দা উঠলো বেইজিং অলিম্পিকের
খেলাধুলা ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৫:৩৬, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২; আপডেট: ০১:৪৯, ২৯ অক্টোবর ২০২২
মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে বেইজিং অলিম্পিক ঘিরে চলছে বিতর্ক। ছবি : সিএনএন।
নানা বিতর্ককে সঙ্গী করেই চীনে আজ শুক্রবার থেকে শুরু হতে যাচ্ছে বেইজিং অলিম্পিক। এর মধ্য দিয়ে বেইজিংই প্রথমবারের মতো গ্রীষ্ম ও শীতকালীন অলিম্পিকের আয়োজক শহর হতে যাচ্ছে। তবে করোনার কঠোর বিধিনিষেধ ছাড়াও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ ও বয়কট সংক্রান্ত জটিলতার কারণে শুরুর আগেই খেলার জগতের অন্যতম বড় এই আয়োজনকে ঘিরে তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক উত্তেজনা।
কঠোর 'জিরো কোভিড' নীতির কারণে অলিম্পিক চলাকালে স্টেডিয়ামে সর্বসাধারণের প্রবেশ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ফলে এবার চীনাদের কাছে অলিম্পিকের কোনও ধরনের টিকিটও বিক্রি বন্ধ রেখেছে আয়োজক কর্তৃপক্ষ। ঘরে বসেই তাদের উপভোগ করতে হবে নিজ দেশে খেলার বড় এ আয়োজন। শুধু ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য ও সরকার পরিচালিত প্রতিষ্ঠানের কর্তা-ব্যক্তিদেরই এখানে প্রবেশের ও সরাসরি খেলা উপভোগের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। অবশ্য কোভিড১৯ পরীক্ষা করানোসহ তাদেরও রয়েছে নানা ধরনের বাধ্যবাধকতা।
করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া রোধে খেলোয়াড়সহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেরও মানতে হচ্ছে নানা বিধিনিষেধ। এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাতায়াতের ক্ষেত্রে তাদের বাধ্যতামূলকভাবে থাকতে হচ্ছে একটি 'সুরক্ষা বলয়'-এর মধ্যে। এ বলয় থেকে বের হওয়ার কোনও সুযোগ বা অনুমতি তাদের কারও নেই। হোটেল থেকে খেলার মাঠে যেতে তাদের ব্যবহার করতে হচ্ছে নির্দিষ্ট পরিবহন এবং যাতায়াতের এ পুরো সময় তাদের নির্দিষ্ট ওই পরিবহনেই থাকার কঠোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ সময় খেলোয়াড়দের দেখতে উন্মুখ ভক্তের সঙ্গে কোনও ধরনের সাক্ষাৎ না করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাদের।
তবে তাদের কঠোর এ নীতির জের ধরে চীনের মানবাধিকার লঙ্ঘন সংক্রান্ত পুরোনো বিতর্ক আবার নতুন করে আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এরইমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইংল্যান্ডসহ ডজনেরও বেশি দেশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা বেইজিং অলিম্পিক বয়কট করে চীনে না আসার কথা জানিয়েছেন। অবশ্য, এর মধ্যে দিয়ে পশ্চিমারা একে অযথাই একটি রাজনৈতিক চেহারা দিতে চাইছে দাবি করে চীনা নেতৃত্বসহ রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম এ অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে।
এদিকে, একটি কার্যকর ও নিরাপদ আয়োজনেরই বরং প্রতিজ্ঞা করেছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। করোনার বিস্তার রোধে খেলোয়াড় ও সংশ্লিষ্টদের ক্ষেত্রে কিছু কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হলেও অন্য অনেক দিক দিয়েই অলিম্পিকে স্বাভাবিক আবহ বজায় রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রথা মেনেই অলিম্পিক মশাল প্রজ্জ্বালনের আগের দিন মশাল নিয়ে র্যালি বের করা হয়েছে। সারা শহর সাজানো হয়েছে অলিম্পিকের থিমে। দোকানগুলোতে দেখা যাচ্ছে অলিম্পিকের থিমের নানা ধরনের পণ্যের সমাহার। সরাসরি স্টেডিয়ামে বসে খেলা উপভোগের সুযোগ এবার না হলেও নিজ দেশে অলিম্পিক উদযাপনে খুশি চীনারাও। সূত্র : বিবিসি।