ডিপসিকের জনপ্রিয়তা একটি সতর্কবার্তা : ট্রাম্প

চীনের নতুন এআই স্টার্টআপ ডিপসিক নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই) নিয়ে কাজ করা মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলোর বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়ার সময় এসেছে বলে সতর্ক করেন তিনি। গতকাল সোমবার ট্রাম্প এ মন্তব্য করেন।

মার্কিন অঙ্গরাজ্য ফ্লোরিডায় রিপাবলিকানদের এক সভায় তিনি বলেন, ‘চীনা প্রতিষ্ঠানের তৈরি ডিপসিক নামের এআই প্রযুক্তি আমাদের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য একটি সতর্কবার্তা বলেই আমি মনে করি। আশা করি, এর মধ্য দিয়ে তারা নিজেদের অবস্থান জোরালো করতে ও এ খাতে সফল হতে চেষ্টা করবে।’

ট্রাম্প এমন সময় এ  মন্তব্য করলেন যখন ডিপসিক নামের নতুন এ চীনা চ্যাটবট বাজারে আসার সঙ্গে সঙ্গে সব মার্কিন এআই প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে ছাড়িয়ে যায়। এমনকি তারা খুবই কম খরচে এ প্রযুক্তি তৈরি করেছে বলে চীনা প্রতিষ্ঠানটি জানায়।

গতকাল যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাপলের অ্যাপ স্টোরে ডিপসেক চ্যাটবট ছিলো শীর্ষস্থানীয় পণ্য। এর মধ্য দিয়ে  জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে এটি মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ওপেনএআইয়ের জনপ্রিয় এআই চ্যাটবট চ্যাটজিপিটিকেও ছাড়িয়ে যায়। ২০২৩ সালে প্রথম বাজারে আনার পর চ্যাটজিপিটির জনপ্রিয়তা তুঙ্গে উঠে।

এ অবস্থায় ডিপসিকের এ জনপ্রিয়তা অনেক উদ্যোক্তারই দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে। একইসঙ্গে, মার্কিন এআই মডেলের ভবিষ্যতও এখন প্রশ্নের সম্মুখীন।

গতকাল শেয়ার বাজারে এআই চিপসের সবচেয়ে বড় সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ভিডিয়ার সর্বাধিক দরপতন হয়। এক দিনেই প্রতিষ্ঠানটি  ৬০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার লোকসান করে, যা মার্কিন শেয়ার বাজারের ইতিহাসে কোনো প্রতিষ্ঠানের এক দিনে সর্বোচ্চ দরপতন।

অন্যদিকে, আজ মঙ্গলবার চিপ পরীক্ষা করার যন্ত্রাদি তৈরির জাপানি প্রতিষ্ঠান অ্যাডভ্যানটেস্টের ১০ শতাংশ দরপতন হয়। গতকাল এ হার ছিলো ৯ শতাংশ। এটি ভিডিয়ার একটি পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান।

এছাড়া, এআই প্রযুক্তির জন্য পণ্য তৈরির জনপ্রিয় প্রতিষ্ঠান টোকিও ইলেকট্রন, স্টার্ট-আপ উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান সফটব্যাংক গ্রুপসহ ব্রডকম, মাইক্রোসফট এবং গুগলের কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেট প্রতিটিরই ব্যাপক দরপতন হয়।

তবে, এটি বরং মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর ইতিবাচক ভবিষ্যতের জন্য একটি ভালো সুযোগ বলে মনে করছেন ট্রাম্প। কারণ, এর মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলো কম খরচে পণ্য উৎপাদনের দিকে মনোযোগী হবে বলে মনে করেন তিনি।

ট্রাম্প বলেন, ‘আমি চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিষয়ে পড়েছি এবং এদের মধ্যে অনেক প্রতিষ্ঠান একইসঙ্গে খুব দ্রুত এআই প্রযুক্তি তৈরি করছে এবং তা করছে খুব কম খরচে। এটি একদিক দিয়ে ভালো, কারণ, এ কাজে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হবে না। আমি একে ইতিবাচকভাবে দেখছি, এটি আমাদের জন্য একটি বড় সুযোগ।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি এটিকে এজন্য ইতিবাচকভাবে দেখছি কারণ, তাহলে আমাদেরও আর এ প্রযুুুুক্তির উন্নয়নে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হবে না, কিন্তু, তারপরও আমরা সেই একই ফল পাবো বলে আশা করি।’

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে এআই অবকাঠামো গড়ে তুলতে গত সপ্তাহেই ট্রাম্প ৫০০ বিলিয়ন ডলারের এক প্রকল্পের ঘোষণা দেন। জাপানের শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান সফটব্যাংক ও চ্যাটজিটিপির প্রতিষ্ঠাতা মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে।

সূত্র : ডয়চে ভেলে।