কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে নিয়ন্ত্রণে আনা প্রয়োজন : জাতিসংঘ
প্রকাশিত: ২২:৪৯, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪; আপডেট: ২২:৩০, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উন্নয়নের পর এর সম্ভাব্য সুবিধা ও ঝুঁকি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) প্রযুক্তির উন্নয়ন ও বাজারজাতকরণ প্রক্রিয়াকে একটি বৈশ্বিক নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আনা জরুরি। একে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণহীনভাবে ছেড়ে দেওয়া উচিত নয় বলে সতর্ক করা হয়েছে। জাতিসংঘের একটি পরামর্শক দলের পক্ষ থেকে আজ বৃহস্পতিবার এসব সতর্কবার্তা দেওয়া হয়।
এক্ষেত্রে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংক্রান্ত নিয়মাবলী তৈরিতে প্রতিটি দেশের সরকারকেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। তবে, বর্তমানে এ প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রণহীনভাবে এক দেশ থেকে আরেক দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে, এক্ষেত্রে একটি বৈশ্বিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার প্রয়োজন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংক্রান্ত একটি উচ্চ পর্যায়ের পরামর্শক দলের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে আজ এসব কথা উল্লেখ করা হয়।
৩৯ সদস্যের এই প্যানেল থেকে বলা হয়, ‘কৃত্রিম বুদ্বিমত্তার ক্রমবর্ধমান উন্নতির মধ্য দিয়ে বৈশ্বিক ক্ষেত্রে একটি শক্তি ও সম্পদের বলয় তৈরি হয়েছে যার ভূরাজনৈতিক ও ভূঅর্থনৈতিক প্রভাব বিদ্যমান।’
‘তাছাড়া, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ আরোপ বা এর বিবর্তন সম্পর্কে ধারণা পাওয়ার জন্য এর সামগ্রিক বিষয়গুলো বর্তমানে কারও পক্ষেই বোঝা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে, যে বিষয়টি সম্পর্কে কারও সঠিক ধারণাই নেই, সেটির উন্নয়ন, প্রয়োগ ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে আইন প্রণেতারা জবাবদিহিতার কোনো জায়গাও তৈরি করতে পারছে না।’
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরাস গত অক্টোবরে এ পরামর্শক কমিটি গঠন করেন। কমিটির প্রকাশিত এ প্রতিবেদনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কিত সাতটি সুপারিশ করা হয়।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে - স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়াতে কৃত্রিম বৃদ্ধিমত্তার তথ্য সম্বলিত একটি কাঠামো তৈরি করা এবং এ প্রযুক্তির উন্নতিকে কাজে লাগিয়ে যাতে উন্নয়নশীল দেশগুলো সুবিধাভোগী হতে পারে, সেজন্য একটি তহবিল গঠন করা।
কমিটি থেকে বলা হয়, ‘অনেক দেশই পর্যাপ্ত সম্পদ ও অর্থের অভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সুবিধাগুলো যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পারছে না। ফলে, আন্তর্জাতিক সহায়তা ছাড়া অনেকের পক্ষেই এ সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তির উন্নয়ন, বাস্তবায়ন ও যথাযথ প্রয়োগ সম্ভব নয়।’
তবে, এ প্রযুক্তির ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়নে নতুন কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থা গঠনের সুপারিশ করেনি এ কমিটি। বরং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি দিন দিনই ঝুঁকিপূর্ণ ও নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ছে। এ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এর পর্যবেক্ষণ, এ সংক্রান্ত সমস্যা চিহ্নিত করা, সত্যতা যাচাই এবং নিয়ন্ত্রণে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোরই একত্রে একটি কার্যকর আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি প্রকাশিত হয়। এটি ব্যবহারকারীর যেকোনো প্রশ্নেই প্রায় নির্ভুলভাবে মানুষের মতো উত্তর দিতে সক্ষম। মূলত, এর পর থেকেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংক্রান্ত সম্ভাব্য ঝুঁকি ও এর সুবিধাগুলো নিয়ে বিশ্বে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়।
সূত্র : আল-জাজিরা।