মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প
সীমান্ত বন্ধের অঙ্গীকার
প্রকাশিত: ২৩:৩৭, ২০ জানুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ০১:০৮, ২১ জানুয়ারি ২০২৫
প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণের পর দেশে বিদ্যমান প্রতিটি সমস্যার সমাধান করবেন বলে অঙ্গীকার করেন ট্রাম্প।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন রিপাবলিকান দলের ডোনাল্ড ট্রাম্প। আজ সোমবার স্থানীয় সময় বেলা ১২টায় রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে এ শপথ অনুষ্ঠিত হবে। দেশের প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস তাকে শপথ পাঠ করাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে এবার দ্বিতীয়বারের মতো তিনি এ ক্ষমতা গ্রহণ করতে যাচ্ছেন।
এরইমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্টসহ প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ এবং ব্যবসায়ীরা আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে আসতে শুরু করেছেন। একইসঙ্গে অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন অন্যান্য দেশের রাজনীতিবিদরাও।
এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন - বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ফাস্ট লেডি জিল বাইডেন, বিদায়ী ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রধান প্রতিদ্বন্ধী কমলা হ্যারিস, সাবেক ডেমোক্রেটিক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন এবং তার স্ত্রী ও একই দলের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিপাবিলকান জর্জ ডব্লিউ বুশ ও সাবেক ফাস্ট লেডি লরা বুশ, আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট হাভিয়ার মিলি, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি।
এছাড়াও যোগ দিয়েছেন প্রযুক্তি বিশ্বের আধিপত্যশালী ইলন মাস্ক, জেফ বেজোস, মার্ক জাকারবার্গসহ বিনোদন অঙ্গনের অনেকে।
এদিকে, শপথ গ্রহণের আগের দিন অর্থাৎ গতকাল রবিবার ওয়াশিংটনে একটি র্যালিতে যোগ দেন ট্রাম্প। সে সময় তিনি সীমান্ত দিয়ে শরণার্থীদের প্রবেশ বন্ধে সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নিবেন বলে সমর্থকদের উদ্দেশ্যে অঙ্গীকার করেন।
এক্ষেত্রে, তিনি মূলত ভেনেজুয়েলার শরণার্থীদের উদ্দেশ্য করে এ অঙ্গীকার করেন বলেই ধারণা করা হচ্ছে। কারণ, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে ভেনেজুয়েলার একটি অপরাধী চক্রের তৎপরতা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে।
এ বিষয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘তারা অপরাধ জগতের বাসিন্দা এবং তাদেরকে শিগগিরই এ দেশ থেকে বের করে দেওয়া হবে।’
এছাড়া, তিনি দেশে বিদ্যমান প্রতিটি সমস্যার সমাধান করবেন বলেও জোরালো অঙ্গীকার করেন। একইসঙ্গে, ডেমোক্রেটিক দলের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বাস্তবায়িত অনেক আইনও বাতিল করবেন বলে ট্রাম্প জানান।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা যেকোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা গ্রহণের ইতিহাসে এবারই প্রথমবারের মতো একটি সর্বোচ্চ সফল প্রথম দিন, এর থেকেও সফল প্রথম সপ্তাহ এবং অসাধারণ একটি প্রথম ১০০ দিন জনগণকে উপহার দিতে যাচ্ছি।’
এদিকে, আজকের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের পর পরই ট্রাম্প ‘বার্থরাইট সিটিজেনশিপ’ নামের আইনটি বাতিলের উদ্যোগ নিবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ আইনের আওতায় বিভিন্ন দেশ থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আগত শরণাথীদের কোনো সন্তান দেশটিতে জন্মগ্রহণ করলে জন্মসূত্রে তারা মার্কিন নাগরিক হওয়ার সুবিধা পেয়ে আসছিলো।
এছাড়াও, ক্ষমতা গ্রহণের পর পরই তিনি যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশ ও চোরাকারবারি ঠেকাতে জাতীয় জরুরি অবস্থা জারি করতে পারেন বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে।
একইসঙ্গে, তিনি ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটাল ভবনে আক্রমণকারীদের বেশ কয়েকজনকে বিনা বিচারে ক্ষমা প্রদান করতে পারেন বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
তবে, শেষ মুহূর্তে ক্যাপিটাল ভবনের এ দাঙ্গার ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটির বেশ কয়েকজন কংগ্রেস সদস্যসের প্রতি সাধারণ ক্ষমা প্রদান করে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেন বিদায়ী জো প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
উল্লেখ্য, ডোনাল্ড ট্রাম্প হচ্ছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট যিনি ফৌজদারি মামলার আসামী।
সূত্র : বিবিসি, সিএনএন, ডয়চে ভেলে, আল-জাজিরা।