সিপিইসির দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরুর বিষয়ে একমত চীন ও পাকিস্তান
রাজনীতি ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৩:১৮, ১২ জানুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ০০:৫২, ১৩ জানুয়ারি ২০২৫
সিপিইসি মূলত পাকিস্তানে চীনের হাজার কোটি ডলারের বিশাল এক প্রকল্প।
চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরের (সিপিইসি) দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরুর বিষয়ে আবারও নিজেদের ইতিবাচক অবস্থান নিশ্চিত করেছে দেশ দুটি। গতকাল শনিবার দুই দেশের পরররাষ্ট্র সচিবদের মধ্যে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্তের কথা জানায় চীন ও পাকিস্তান।
গত শুক্রবার চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে দেশটির উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী (ভাইস ফরেন মিনিস্টার) সান ওয়েডং এবং পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বেলোচের মধ্যে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এটি ছিলো উপ-পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের চতুর্থ পর্যায়ের কূটনৈতিক বৈঠক।
এ বিষয়ে গতকাল চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত এক বার্তায় বলা হয়, ‘চীন ও পাকিস্তানের বন্ধুত্বের ইতিহাস অনেক দীর্ঘ এবং বিভিন্ন পরিস্থিতিতে এ বন্ধুত্ব অটুট রয়েছে। বরং, সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে দেশ দুটির পারস্পরিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়েছে।’
এদিকে, শুক্রবার একইসঙ্গে সিপিইসির ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন অ্যান্ড কোঅর্ডিনেশন (জেডব্লিউজি-আইসিসি) নামের যৌথ কার্যনির্বাহী দলের পঞ্চম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ বৈঠকে উভয় দেশের উপ-পররাষ্ট্র সচিব অংশ নেন। বৈঠকে উভয় দেশই সিপিইসি প্রকল্প আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে একমত হয় বলে বৈইজিং জানায়।
এক্ষেত্রে, সিপিইসির দ্বিতীয় পর্যায়ের উন্নয়ন প্রকল্পের মধ্য দিয়ে শিল্পায়ন, বিশেষ অর্থনৈতিক জোন (সিইজেডস), নবায়নযোগ্য জ্বালানি, কৃষি ও জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে উন্নতমানের প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে বলে ইসলামাবাদ থেকে শুক্রবার জানানো হয়।
এ বিষয়ে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত এক বার্তায় বলা হয়, ‘বৈঠকে উভয় দেশই চীন ও পাকিস্তানের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় সম্পর্ক আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে সমন্বয় ও সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে একমত হয়েছে।’
উল্লেখ্য, সিপিইসি নামের এ প্রকল্পটি মূলত চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) নামের মহা পরিকল্পনার একটি অংশ। এই বিআরআই এর মধ্য দিয়ে চীন পুরো বিশ্বের সঙ্গে একটি বাণিজ্যিক রুট স্থাপনের কাজ বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।
তবে, পাকিস্তানে চীনের এ প্রকল্পের কাজ ক্রমাগতভাবে বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। মূলত, দেশটির রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক স্থবিরতা এবং জ্বালানি সংকট এর বড় কারণ।
চলতি সপ্তাহের প্রথম দিকেই শত শত পাকিস্তানি নাগরিক বিদ্যুতের দাবিতে সিপিইসি প্রকল্পের আওতাধীন একটি মহাসড়ক অবরোধ করে। গিলগিত-বালতিস্তান নামের ওই অঞ্চলের বাসিন্দারা মাইনাস ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার মধ্যেও ২০ ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকার কারণে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করে।
একইসঙ্গে, হানজা উপত্যকার কারাকোরাম নামের মহাসড়কে বিক্ষোভের কারণে প্রকল্প এলাকায় চীন থেকে মালবাহী ট্রাক এসেও পৌঁছাতে পারেনি।
তবে, চীনের এ মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হলে দেশটির অর্থনৈতিক দুরাবস্থা কেটে যাবে বলে প্রত্যাশা পাকিস্তানের।
সূত্র : ডয়চে ভেলে।