আফগান শরণার্থীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে যাচ্ছে পাকিস্তান
রাজনীতি ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:৪১, ১ জুলাই ২০২৪; আপডেট: ০১:৫৬, ১ জুলাই ২০২৪
অবৈধ শরণার্থীদের কারণে দেশটিতে নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়ছে বলে দাবি পাকিস্তানের।
পাকিস্তানে বসবাসরত আফগান শরণার্থীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করতে যাচ্ছে দেশটি। এর মধ্য দিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো এ উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে পাকিস্তান। আগামী রবিবার শুরু হতে যাওয়া এ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এবার ৮ লাখ শরণার্থীকে নিজ দেশে ফেরত পাঠাবে দেশটি।
এর আগে গত নভেম্বরে পাকিস্তানে বসবাসরত ৫ লাখ ৪১ হাজার আফগান শরণার্থীকে দেশটি ছাড়তে বাধ্য করে সরকার। এবারও এ শরণার্থীরা স্বেচ্ছায় দেশ ত্যাগ না করলে তাদের গ্রেফতার করা হবে এবং দেশটি ছাড়তে বাধ্য করা হবে বলে জানানো হয়।
এদিকে, বর্তমানে পাকিস্তানে প্রায় ৪৪ লাখ আফগান শরণার্থী রয়েছে বলে দেশটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়। প্রথম দফায় এসব শরণার্থীদের দেশে ফেরত পাঠানোর পর এ তথ্য জানায় পাকিস্তান সরকার। এসব শরণার্থীর মধ্যে ১৭ লাখ ৩০ হাজারেরই বৈধ কাগজপত্র নেই বলেও সে সময় জানানো হয়।
একইসঙ্গে, এসব অবৈধ শরণার্থীদের কারণে দেশটিতে নিরাপত্তা ঝুঁকি বেড়ে যাওয়াসহ এরইমধ্যে ধুঁকতে থাকা অর্থনীতির উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বলে দাবি করে পাকিস্তান। এ কারণেই তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে বাধ্য হচ্ছে বলে জানায় দেশটি।
এছাড়া, বর্তমানে পাকিস্তানজুড়ে অস্ত্র হামলা ব্যাপকহারে বেড়ে চলেছে। আফগান জঙ্গিরা এসব হামলা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করে পাকিস্তান। এসব ঘটনার পর পরই মূলত দেশটিতে বহু দশক ধরে বসবাস করা শরণার্থীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করে পাকিস্তান। তবে, দেশটির এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন তালেবান সরকার।
এদিকে, বৈধ কাগজপত্র না থাকা এসব আফগান শরণার্থীদের দেশে ফেরত পাঠানোর আগে তাদের সম্পর্কে ভালোভাবে খোঁজখবর নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ফিলিপ্পা চ্যান্ডলার। তিনি বর্তমানে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) পাকিস্তান শাখায় কর্মরত রয়েছেন। তাঁর মতে, তাদের আন্তর্জাতিক সুরক্ষা প্রয়োজন। কারণ, ‘তারা শরণার্থী’।
চ্যান্ডলার বলেন, ‘তারা কোনো জঙ্গি কর্মকাণ্ডে জড়িত নয়। তারা হচ্ছে গুটিকয় সাধারণ মানুষ যারা বাধ্য হয়ে নিজ দেশ থেকে পালিয়ে এসেছে এবং তাদের এখন নিরাপত্তা প্রয়োজন।’ ফলে, কোনো আফগান যদি জঙ্গি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকে, তাহলে সে সমস্যার সমাধান আলাদাভাবে করা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
উল্লেখ্য, শরণার্থীদের অধিকার রক্ষায় ১৯৫১ সালে গঠিত জাতিসংঘ কনভেনশনে স্বাক্ষর করেনি পাকিস্তান। দেশটির আইনেও শরণার্থীদের সুরক্ষা সংক্রান্ত আইনের কোনো উল্লেখ নেই।
সূত্র : আল-জাজিরা।