যুদ্ধ শুরুর দুই সপ্তাহ পর প্রথম ত্রাণ পৌঁছলো গাজায়
রাজনীতি ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৩:১৮, ২১ অক্টোবর ২০২৩; আপডেট: ২৩:২৯, ২১ অক্টোবর ২০২৩
দুর্ভোগের শিকার মানুষের দরকারের তুলনায় এ ত্রাণ একেবারেই নগণ্য বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
ইসায়েলি-ফিলিস্তিন যুদ্ধ শুরুর প্রায় দুই সপ্তাহ পর গাজা উপত্যকায় আজ শনিবার ত্রাণের প্রথম চালানটি পৌঁছেছে। ইসরায়েল গাজা দখলে নিয়ে পুরো এলাকা অবরুদ্ধ রাখায় এতোদিন সেখানে কোনো মানবিক সহায়তা পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। কিছুটা শিথিলতা দেওয়ার পর শনিবার সকালে প্রথমবারের মতো ত্রাণবাহী ২০টি ট্রাক উপত্যকাটিতে পৌঁছে। এর মধ্যে একটি ট্রাকে কফিন নেওয়া হয়েছে।
মিসর নিয়ন্ত্রিত রাফা সীমান্তের কাছে বেশ ক'দিন ধরেই প্রায় ৩ হাজার টন ত্রাণবাহী ২০০টি ট্রাক অপেক্ষমান ছিলো। ইসরায়েলের পক্ষ থেকে অনুমতি দেওয়ার পরই শনিবার প্রথম ধাপে ২০টি ট্রাক গাজায় প্রবেশের সুযোগ পেল।
জাতিসংঘের সাদা পতাকাবাহী ২০টি ট্রাক ত্রাণ নিয়ে মিসর থেকে রাফা হয়ে গাজা উপত্যকায় ঢুকছে বলে গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে।
গাজায় দুর্গত মানুষের কাছে সীমিত আকারে হলেও ত্রাণ সহায়তা পৌঁছানোর সুযোগ করে দেওয়ার বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মহল।
তবে সরবরাহ করা ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই নগণ্য বলে মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠনগুলো আশঙ্কা জানিয়েছে। গাজায় পৌঁছানো এ ত্রাণের পরিমাণকে জাতিসংঘ 'সমুদ্রে একফোঁটা পানি' বলে মন্তব্য করেছে।
দুই সপ্তাহ আগে হামাসের আকস্মিক হামলার জবাবে পাল্টা আক্রমণ চালায় ইসরায়েল। হামলা চালিয়ে গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণে নেয়। এরপর থেকে পুরো এলাকা অবরোধ করে রাখার পাশাপাশি সেখানে কোনো ধরনের মানবিক সহায়তা পৌঁছাতেও দেয়নি ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী।
আন্তর্জাতিক মহল থেকে দুর্গত মানুষের কাছে সহায়তা পৌঁছাতে দেওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করা হলেও তাতে এতোদিন সাড়া দেয়নি দেশটি।
এ অবস্থায় মিসর তার সীমান্ত দিয়ে ত্রাণবাহী ২০টি ট্রাক ফিলিস্তিনে ঢুকতে দিতে রাজি হয়েছে বলে গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানান। তবে মিসর হয়ে খাবার,পানি ও ওষুধ সরবারাহ করতে পারলেও জ্বালানি সরবরাহের সুযোগ দেয়নি ইসরায়েল।
এছাড়া এসব ত্রাণ গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলে বেসামরিক নাগরিকদের মধ্যে সরবরাহ করা হলেও হামাসের সেনাদের কাছে এ ত্রাণের কোনো ভাগ পৌঁছানো যাবে না বলে শর্ত আরোপ করে দেশটি।
এদিকে হামাসের হাতে জিম্মি প্রায় ২০০ ইসরায়েলির মধ্যে গতকাল শুক্রবার দুজনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে । মুক্তি পাওয়া দুজন সম্পর্কে মা ও মেয়ে বলে জানা গেছে।
হামাসের হাতে জিম্মি ব্যক্তিদের মুক্ত করতে চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু । তবে 'বিজয়ী' না হওয়া পর্যন্ত দেশটির সামরিক বাহিনী লড়াই চালিয়ে যাবে বলেও জানান তিনি ।
উল্লেখ্য, প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে চলমান এ যুদ্ধ বন্ধে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন আরব ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশের নেতারা। এর অংশ হিসেবে তারা মিসরে বৈঠক করবেন বলেও জানা গেছে।
তবে ইরান ও ইসরায়েলের মতো গুরুত্বপূর্ণ শক্তিগুলো বৈঠকে অংশ নিতে আগ্রহী নয় বলে জানা গেছে। ফলে এ সঙ্কট সমাধানের ব্যাপারেও খুব আশাবাদী হতে পারছেন না রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
সূত্র : সিএনএন, বিবিসি ও পলিটিকো ডট ইইউ।