নিজেদের মধ্যে ব্যবধান কমিয়ে আনার অঙ্গীকার যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের
প্রকাশিত: ২৩:২৪, ১৯ জুন ২০২৩; আপডেট: ১১:৪১, ২০ জুন ২০২৩
চীনের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধারই এ সফরের মূল উদ্দেশ্য বলে জানা যায়।
দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতি স্থিতিশীল করার অঙ্গীকার করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। চীন সফররত যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিংপিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় তারা এ অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
গত পাঁচ বছরের মধ্যে এটি কোনো মার্কিন উচ্চ পর্যায়ের কূটনীতিকের প্রথম চীন সফর।
দুইদিনের এ রাষ্ট্রীয় সফরের শেষদিন আজ সোমবার ব্লিঙ্কেন চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সাক্ষাৎ করেন। মূলত যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রতিদ্বন্দী ও বৈশ্বিক ক্ষমতাধর দেশগুলোর অন্যতম চীনের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধারই এ সফরের মূল উদ্দেশ্য বলে জানা যায়।
এ অবস্থায় তাদের আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে বলে বৈঠকের পর চীনা প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন। অন্যদিকে উভয় দেশই এখন আরও আলোচনার জন্য প্রস্তুত বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
ব্লিঙ্কেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি এটি বলতে চাই যে উচ্চ পর্যায়ে যদি যোগাযোগ অব্যাহত থাকে তাহলে উভয় পক্ষের মধ্যে বিদ্যমান দূরত্ব কমিয়ে আনা সম্ভব এবং এর ফলে দেশ দুটির মধ্যে সুস্থ প্রতিযোগিতাও সংঘাতে রূপ নিবে না।’
চীনের তিয়েনমান স্কয়ারের গ্রেট হল অব পিপল এ শি জিংপিংয়ের সঙ্গে ৩৫ মিনিটের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক শেষে ব্লিঙ্কেন সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘চীনা প্রেসিডেন্টও একই রকম কথা বলেছেন। ফলে আমরা উভয়ই সম্পর্ক স্থিতিশীল করার প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে একমত হয়েছি।’
এদিকে দুই দেশের সম্পর্ক সঠিক পথেই এগুচ্ছে বলে বৈঠক শেষে জানিয়েছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সম্পর্কের ক্ষেত্রে উভয় পক্ষেরই অগ্রগতি হয়েছে এবং নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে আমরা একমত হতে পেরেছি। এটা খুবই ভালো একটি বিষয়।’
যদিও এ সফরে ব্লিঙ্কেনের চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতের শিডিউল ছিলো না। বরং বৈঠকের মাত্র এক ঘণ্টা আগে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামল থেকেই মূলত দেশ দুটির মধ্যে দূরত্ব বাড়তে থাকে। বাণিজ্য যুদ্ধ ছিলো সে সময় সবচেয়ে বড় একটি বিষয়। পরবর্তীতে তাইওয়ান প্রশ্নে চীনের অবস্থান নিয়েও ট্রাম্প সরকারের সঙ্গে দেশটির ব্যাপক মতবিরোধ দেখা দেয়।
আর যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শাসনামলে চীনের গোয়েন্দা বেলুন নিয়ে বেশ কয়েক দফা দেশ দুটির মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। চলতি বছরের শুরুর দিকে চীনের বেলুন যুক্তরাষ্ট্রের আকাশ সীমায় প্রবেশের পরই মূলত উত্তেজনা শুরু হয়।
বেসামরিক কাজে নিয়োজিত এ বেলুন পথ হারিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আকাশসীমায় প্রবেশ করেছে বলে চীনের তরফ থেকে দাবি করা হলেও মার্কিন সামরিক স্থাপনায় নজরদারির জন্য চীন এ বেলুন পাঠিয়েছে বলে অভিযোগ করে দেশটি। পরবর্তীতে গুলি করে এ বিমান ভূপাতিত করে যুক্তরাষ্ট্র।
তবে এতোসব মতপার্থক্যের পরও দেশ দুটির মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক হতে পারে বলে আশাবাদ জানিয়েছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিংপিং।
সূত্র : বিবিসি।