পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গ্রেফতার : চলছে বিক্ষোভ
রাজনীতি ডেস্ক
প্রকাশিত: ২২:১০, ৯ মে ২০২৩
ইমরান খানকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে লাহোর, করাচি ও পেশোয়ারসহ বিভিন্ন স্থানে তার সমর্থকরা বিক্ষোভ করছে।
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দেশটির রাজধানী ইসলামাবাদে হাইকোর্ট চত্বর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
দুর্নীতির অভিযোগে চলমান এক মামলায় হাজিরা দিতে আদালতে এসেছিলেন ইমরান খান। এ ঘটনার সময় প্রকাশিত একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, আদালত চত্বর থেকেই তাকে আটক করে নিয়ে যায় আধাসামরিক বাহিনীর কয়েক ডজন সদস্য।
ইমরান খানকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে লাহোর, করাচি ও পেশোয়ারসহ বিভিন্ন স্থানে তার সমর্থকরা বিক্ষোভ করছে।
দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ইমরান খানকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে পাঞ্জাব পুলিশের প্রধান এক বিবৃতিতে জানান। ডন পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ বিষয়ে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে আল-কাদির ট্রাস্টের নামে যে জমি বরাদ্দ দিয়েছিলেন ইমরান খান, তা তার ও তার স্ত্রীর মালিকানাধীন।
তবে বরাবরের মতোই এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইমরান খান। তিনি দাবি করেছেন, তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির এ অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এ অবস্থায় ভবিষ্যতে যা-ই হোক না কেন, এর জন্য তিনি প্রস্তুত আছেন বলে ইসলামাবাদে যাওয়ার পথে ধারণ করা এক ভিডিও বার্তায় সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী জানান। তাকে গ্রেফতারের আগে তার দল পিটিআই (পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ) থেকে ওই ভিডিও বার্তা প্রকাশ করা হয়।
প্রকাশিত এ বার্তায় ইমরান খান বলেন, 'গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে আসুন, আমার উকিলরা প্রস্তুত থাকবে। আপনারা যদি আমাকে কারাগারে পাঠাতে চান, তাহলে আমি এর জন্য প্রস্তুত আছি।'
এর আগেও ইমরান খানকে আরও কয়েকবার লাহোর থেকে আটকের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তার সমর্থকরা রাস্তা বন্ধ করে রাখার কারণে সেসব চেষ্টা ব্যর্থ হয় এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে ইমরান সমর্থকদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
তবে আজকের ঘটনার সময় পুরো ইসলামাবাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনেক কঠোর ছিলো। ফলে সমর্থকদের পক্ষে তার গ্রেফতার এড়ানো সম্ভব হয়নি।
এদিকে ঘটনার পরপরই ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ থেকে সমর্থকদের প্রতি এ ঘটনার প্রতিবাদে আন্দোলনের আহ্বান জানানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাকে গ্রেফতারের এক ঘণ্টার মধ্যেই দেশটির লাহোর, করাচি ও পেশোয়ারসহ আরও বেশ কিছু শহরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
প্রকাশিত এক ভিডিও ফুটেজে পিটিআই সমর্থকদের লাহোরে সেনাদলের প্রধানের বাসভবনে প্রবেশ করে আসবাবপত্র ও অন্য জিনিসপত্র নষ্ট করতে দেখা গেছে। এ ছাড়া আন্দোলনকারীরা করাচিতে প্রধান সড়ক অবরোধ করে। ইসলামাবাদে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ জলকামান ব্যবহার করে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে ইমরান খান পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। কিন্তু গত বছরের এপ্রিলে দেশটির সেনাবাহিনী তাকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করে। এরপর তার বিরুদ্ধে দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগে কয়েক ডজন মামলা করা হয়।
ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই ইমরান খান আগাম নির্বাচনের দাবিতে কর্মসূচি চালিয়ে আসছিলেন। এ বছরের শেষ দিকে দেশটিতে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে।
গত মাসেই একটি প্রতিবাদ সভা করার সময় তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়া হয়। ওই ঘটনায় তিনি অল্পের জন্য বেঁচে যান। এ অবস্থায় গত সোমবার সরকারের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনেন তিনি। এরপর 'ভিত্তিহীন অভিযোগ' করার কারণে সেনাবাহিনী থেকে তাকে সতর্ক করা হয়েছিলো।
সূত্র : বিবিসি।