নায়াগ্রা জলপ্রপাতে নতুন আকর্ষণ
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশিত: ২২:৪৫, ৯ নভেম্বর ২০২২; আপডেট: ১২:৫৯, ৭ মে ২০২৩
জলপ্রপাতের তলদেশে : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা সীমান্তবর্তী অন্যতম প্রাকৃতিক আশ্চর্য এবং দর্শনীয় স্থান নায়াগ্রা জলপ্রপাতে দর্শনার্থীদের জন্য নতুন সুবিধা যোগ করা হয়েছে। বিশাল এ জলরাশি থেকে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য একটি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের তৈরি করা সুরঙ্গ সম্প্রতি দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এর মধ্য দিয়ে তারা এখন জলপ্রপাতটি আরও কাছ থেকে উপভোগ করতে পারবেন।
বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র : দ্য নায়াগ্রা পার্কস পাওয়ার স্টেশন নামের ওই বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানটি ১৯০৫ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত জলবিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহের কাজ নিয়োজিত ছিলো। ২০০৬ সালের পর কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যায়। তবে ২০২১ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটি দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।
মাটির তলদেশে : আর চলতি বছরের জুলাই মাসে নায়াগ্রা জলপ্রপাতে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয় প্রতিষ্ঠানটির তৈরি করা বিশাল সুরঙ্গটি। এ সুরঙ্গের মধ্য দিয়ে নায়াগ্রা নদী থেকে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে পানি নিয়ে যাওয়া হতো।
নতুন আঙ্গিকে দেখা : সম্প্রতি উন্মুক্ত করা এই সুরঙ্গটির শেষ প্রান্তে দর্শনার্থীদের জন্য তৈরি করা হয়েছে আলাদা একটি জায়গা, যেখান থেকে নায়াগ্রা জলপ্রপাতকে দেখা যাবে নতুন আঙ্গিকে।
বিশাল জলারশির বুকে দৃশ্যমান রঙ্গধনু : সুরঙ্গটির শেষ প্রান্তে তৈরি করা জায়গাটি থেকে দৃশ্যমান নায়াগ্রা জলপ্রপাতের বিখ্যাত ও আকর্ষণীয় রঙ্গধনু।
সেই বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটি : নায়াগ্রা নদীর পানি কাজে লাগিয়ে কেন্দ্রটিতে যে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করা হতো তা দিয়ে আঞ্চলিক শিল্প কারখানাসহ নিকটবর্তী বাফেলো নামক বন্দর নগরীতেও বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হতো। এর ফলে এ নগরটির নাম হয়ে যায় - ‘সিটি অব লাইট’ বা ‘আলোর নগর।’
সুরঙ্গ তৈরির নেপথ্যে : সে সময় বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির জন্য পানি সরবরাহের জন্য হাজার হাজার শ্রমিক শাবল, খুন্তি এমনকি ডিনামাইট দিয়ে বড় বড় পাথরের চাই ভেঙ্গে দীর্ঘ এ সুরঙ্গটি তৈরি করেন। বিশাল এ কর্মযজ্ঞ শেষ করতে তাদের সময় লাগে পাক্কা চারটি বছর।
স্থায়িত্ব : বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি তৈরি করা হয়েছিলো মজবুত ভিত্তির উপর। ফলে চালু থাকা অবস্থায় মাত্র দুইবার এটি মেরামতের প্রয়োজন পরে।
শুধুই কংক্রিটের স্থাপনা নয় : শুধু বড় বড় পাথর ভেঙ্গে সুরঙ্গ তৈরি করে একে কংক্রিটের স্থাপনায় সীমাবদ্ধ রাখতে চাননি এর নকশাকার নিউ ইয়র্কের স্থপতি অ্যালগারনন এস. বেল। বরং পৃথিবীর সপ্তমাশ্চর্যের অন্যতম এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মধ্যে তিনি বিলীন করে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন এ স্থাপনাটিকে। আর এ কারণেই প্রাকৃতিক আবহ ধরে রাখতে তিনি এর বাইরের দেওয়ালগুলো যেমন গড়েছেন চুনাপাথর দিয়ে তেমনি বিশাল নীল এ জলরাশির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এর ছাদ রাঙ্গিয়ে দিয়েছেন নীল রঙ্গের টাইলসে।
পাখির চোখে : উপর থেকে ধারণ করা এ ছবিটিতে একইসঙ্গে বিখ্যাত নায়াগ্রা জলপ্রপাত ও নায়াগ্রা পার্কস পাওয়ার স্টেশনটি দৃশ্যমান হয়েছে।
সূত্র : সিএনএন।