ট্রাম্পের কাছ থেকে ক্যালিফোর্নিয়া কেনার আবেদনে ব্যাপক সাড়া
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশিত: ২৩:০২, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ২৩:০৪, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

‘যুক্তরাষ্ট্রের ড্যানিশ রাজধানী’ হিসেবে পরিচিত ক্যালিফোর্নিয়ার সোলভাং শহর।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য ক্যালিফোর্নিয়া কিনে নেওয়ার জন্য ডেনমার্কের প্রতি আবেদন জানানো হয়েছে। অনলাইনে এ আবেদন দাখিল করার পর এতে ব্যাপক সাড়াও পড়েছে। ‘মেক ক্যালিফোর্নিয়া গ্রেট অ্যাগেইন’ এ অঙ্গীকার সম্বলিত আবেদনটিতে আজ বুধবার পর্যন্ত ২ লাখের বেশি মানুষ স্বাক্ষর করেছে।
মূলত, ট্রাম্পের গ্রিনল্যান্ড কিনে নেওয়া বা সম্ভব না হলে তা জোরপূর্বক দখলের ঘোষণার বিপরীতে এই অনলাইন প্রচারনা শুরু হয়। ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তকে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করে শুরু হওয়া এ প্রচারণায় ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেন থেকে ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যটি পরিচালনার কথা উল্লেখ করা হয়।
এতে বলা হয়, ‘আপনি কি কখনো মানচিত্রের দিকে তাকিয়ে এটা ভেবেছেন যে ডেনমার্কের আসলে কি প্রয়োজন? এর প্রয়োজন আরও সূর্যের আলো, পাম গাছ এবং রোলার স্কেটস। তবে, আশার কথা হচ্ছে এ জীবনে আমাদের এ স্বপ্ন সত্যি হওয়ার দারুণ একটি সুযোগ এসেছে।’
আরও বলা হয়, ‘চলুন ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছ থেকে আমরা ক্যালিফোর্নিয়া কিনে নেই। হ্যাঁ, আপনি ভুল শোনেননি। ক্যালিফোর্নিয়া আমাদের হতে পারে।’
এভাবে ক্যালিফোর্নিয়া দখলের ফলে প্রাপ্ত নানা সুবিধার সম্ভাব্য একটি তালিকাও তৈরি করা হয়েছে ওয়েবসাইটিতে। এর মধ্যে এ অঙ্গরাজ্যটিতে অবস্থিত বিখ্যাত থিম পার্ক ডিজনিল্যান্ডের নাম পরিবর্তন করে বিখ্যাত ড্যানিশ গল্পকারের নামানুসারে ‘হ্যান্স ক্রিশ্চিয়ান অ্যান্ডারসনল্যান্ড’ করার কথা উল্লেখ করা হয়।
এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদিত অ্যাভোকাডোর ৯০ শতাংশ ক্যালিফোর্নিয়ায় উৎপাদিত হয় বলে সারাজীবন অ্যাভোকাডো টোস্টের অফুরন্ত সরবরাহ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে বলেও উল্লেখ করে ওয়েবসাইটটি।
একইসঙ্গে, রাজ্যটির বেভারলি হিলসে ড্যানিশ সাইকেল লেন ও এর প্রতিটি কোনায় দেশটির জনপ্রিয় ও সুস্বাদু খাবারের দোকান তৈরিরও প্রস্তাব করা হয়।
তবে, বিদ্রুপাত্মক অর্থেই এ আবেদনটি অনলাইনে দাখিল করা হয়েছে এবং শুধু ‘স্বপ্নেই এটা শতভাগ সত্যি’ হওয়া সম্ভব বলেই ওয়েবসাইটিতে বলা হয়। কিন্তু, এ ক্ষেত্রে ক্যালিফোর্নিয়াকে বেছে নেওয়ার পেছনে যৌক্তিক কারণ রয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, ‘ট্রাম্প হয়তো ক্যালিফোর্নিয়া বিক্রি করতে রাজি হয়েও যেতে পারেন।’ কারণ, গত বছর তিনি এ রাজ্যটিকে ‘প্যারাডাইস লস্ট’ বলে উল্লেখ করেছেন। একইসঙ্গে, নিয়মিতই তিনি এর ডেমোক্রেটিক গভর্নর গ্যাভিন নিউসমকে নিয়ে নানা অপমানজনক মন্তব্য করে থাকেন।
এ বিষয়টি উল্লেখ করে ওয়েবসাইটটিতে বলা হয়, ‘এটা স্বীকার করতেই হবে যে, ট্রাম্প ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যটিকে বিশেষ পছন্দ করেন না। তিনি ক্রমাগতই একে দেশটির সবচেয়ে বাজে রাজ্য বলে আসছেন এবং বহু বছর ধরেই এর শাসকদের সঙ্গে মতবিরোধে জড়িয়ে রয়েছেন। তাই, আমরা নিশ্চিত যে ভালো দাম পেলে তিনি এটা বিক্রি করে দেবেন।’
এমনকি, এ লক্ষ্য পূরণে তারা বিদ্রুপের ছলে জনগণের কাছ থেকে ১ ট্রিলিয়ন ডলার সংগ্রহেরও উদ্যোগ নিয়েছে। এ বিষয়ে ওয়েবসাইটটিতে বলা হয়, ‘এ চুক্তিকে আরও মজাদার ও সুস্বাদু করতে আমরা এমনকি এর সঙ্গে জীবনব্যাপী ড্যানিশ পেস্ট্রির সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারি।’
উল্লেখ্য, ড্যানিশ ক্যালিফোর্নিয়ার ধারণাটি অবিশ্বাস্য মনে হলেও এর সঙ্গে বাস্তবতার কিছুটা সামঞ্জস্য রয়েছে। কারণ, ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের দক্ষিণে অবস্থিত সান্তা বারবারা কাউন্টির সোলভাং শহরটি মূলত ১৯১১ সালে ডেনমার্কের তিন অভিবাসী গড়ে তোলেন। ফলে, শহরটি এরইমধ্যে ‘যুক্তরাষ্ট্রের ড্যানিশ রাজধানী’ হিসেবে পরিচিত।
সুস্বাদু পেস্ট্রির জন্য পর্যটকদের মধ্যে জনপ্রিয় এ শহরটির সোলভাং নামের অর্থ ‘রৌদ্র্যজ্জ্বল মাঠ’, যেখানে আরও রয়েছে ড্যানিশ বায়ুকল, হ্যান্স ক্রিশ্চিয়ান অ্যান্ডরসন জাদুঘর এবং কোপেনহেগেন ড্রাইভ নামের একটি প্রধান সড়ক।
সূত্র : ডয়চে ভেলে।