অন্যান্য

দক্ষিণ কোরিয়া : বিধ্বস্ত উড়োজাহাজের ইঞ্জিনে পাখির ডিএনএ শনাক্ত

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২০:৫৯, ২৭ জানুয়ারি ২০২৫;  আপডেট: ১৪:২৬, ২৮ জানুয়ারি ২০২৫

দক্ষিণ কোরিয়া : বিধ্বস্ত উড়োজাহাজের ইঞ্জিনে পাখির ডিএনএ শনাক্ত

আনুষ্ঠানিকভাবে উড়োজাহাজটি বিধ্বস্তের বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা পেতে কর্তৃপক্ষের আরও কিছুটা সময় লাগবে বলে জানানো হয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ায় এক দুর্ঘনায় বিধ্বস্ত উড়োজাহাজের ইঞ্জিনে পাখির ডিএনএ শনাক্ত হয়েছে। জেজু নামের এয়ারলাইনসের ওই উড়োজাহাজের ইঞ্জিনে পাখির পালক ও রক্তের দাগ পাওয়া গেছে। তদন্ত কমিটির প্রথম প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে বলে আজ সোমবার নিশ্চিত করা হয়।

প্রকাশিত প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ‘আরও পরীক্ষার জন্য ডিএনএর নমুনা বিশেষায়িত সংস্থায় পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এগুলো বৈকাল হ্রদের পরিযায়ী পাখি বলে ধারণা করা হচ্ছে।’

এগুলো মূলত শীত মৌসুমে সাইবেরিয়া থেকে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে কোরিয়ার দিকে আসা এক জাতের পরিযায়ী হাঁস বলে ধারণা করা হচ্ছে বলে জানানো হয়।

দুর্ঘটনার দিনের উল্লেখ করে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ‘রানওয়ে ০১ এ অবতরণের আগ মুহূর্তে বিমান চালক একদল পাখির উপস্থিতি লক্ষ্য করে এবং সে সময় নিরাপত্তা ক্যামেরায় ধারণ করা ছবিতেও একদল পাখিকে উড়োজাহাজের একদম কাছাকাছি চলে আসতে দেখা যায়।’

কিন্তু, বিধ্বস্ত হওয়ার আগ মুহূর্তে উড়োজাহাজের ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো কিনা, সে বিষয়ে প্রতিবেদনে কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি।

তবে, উড়োজাহাজটি অবতরণের সবুজ সংকেত দেওয়ার আগে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে পাখির সঙ্গে সংঘর্ষের সম্ভাব্য ঝুঁকির বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছিলো। উড়োজাহাজের রেকর্ডার থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানানো হয়।

কিন্তু, এর এক মিনিট পরেই সব ধরনের রেকর্ড বন্ধ হয়ে যায়। আর এর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই পাখির সঙ্গে সংঘর্ষের কারণে চালক বিপদ সংকেত দেয় এবং অবতরণ চাকা ছাড়াই উড়োজাহাজটি জরুরি অবতরণে বাধ্য হয়।

তবে, আনুষ্ঠানিকভাবে উড়োজাহাজটি বিধ্বস্তের বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা পেতে কর্তৃপক্ষের আরও কিছুটা সময় লাগবে বলে জানানো হয়েছে। এক্ষেত্রে, পরবর্তী ধাপে তদন্তকারী দল ইঞ্জিনের বিভিন্ন অংশ আলাদা করে এগুলো ভালভাবে পর্যবেক্ষণ করবে।

এছাড়াও, তারা উড়োজাহাজের ভেতরের বিভিন্ন নমুনা এবং নিয়ন্ত্রণ কক্ষের রেকর্ডিংগুলোও বিশ্লেষণ করবে। একইসঙ্গে, পাখির উপস্থিতিসহ রানওয়েতে কোনো বাধা বা অবতরণ চাকা না খোলার কারণগুলোও খতিয়ে দেখা হবে।

এদিকে, বিমানবন্দরে থাকা কংক্রিটের অবকাঠামোতে ধাক্কা লাগাতেই উড়োজাহাজটি এমন বাজেভাবে বিধ্বস্ত হয় বলে অনেক বিশেষজ্ঞ ধারণা করছেন। সাধারণত, অবতরণের সময় উড়োজাহাজগুলোকে দিক নির্দেশনা দিতে এসব কংক্রিটের কাঠামোতে অ্যান্টেনা যোগ করা হয়।

তবে, এ দুর্ঘটনার পর এসব শক্ত অবকাঠামো সরিয়ে সারা দেশের বিমানবন্দরগুলোতে সহজে ভেঙ্গে যায়, এমন কাঠামো প্রতিস্থাপনের ঘোষণা দিয়েছিলো দেশটি।

উল্লেখ্য, গত ২৯ ডিসেম্বর বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মডেলের উড়োজাহাজটি থাইল্যান্ড থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার মুয়ান বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। বিমানবন্দরের কাছে এসে উড়োজাহাজটি জরুরি অবতরণ করে ও রানওয়েতে থাকা একটি কংক্রিটের দেয়ালের সঙ্গে ধাক্কা লেগে বিধ্বস্ত হয়।

এ সময় পুরো উড়োজাহাজটিতে আগুন ধরে যায় এবং এতে থাকা ১৮১ জন যাত্রী ও ক্রয়ের মধ্যে ১৭৯ জনই নিহত হয়। দক্ষিণ কোরিয়ায় এটিই এ পর্যন্ত সবচেয়ে ভয়াবহ উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা।

সূত্র : ডয়চে ভেলে।