দক্ষিণ কোরিয়ায় উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা
জেজু এয়ার প্রধানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশিত: ০২:৩২, ৩ জানুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ১১:০৯, ৫ জানুয়ারি ২০২৫
গত ৩১ ডিসেম্বর মুয়ান শহরের বিমানবন্দরটিতে উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের স্থানে কর্মীদের উদ্ধার তৎপরতা।
দক্ষিণ কোরিয়ার জেজু এয়ার নামের বিমান সংস্থার প্রধান নির্বাহী কিম ই-বায়ের দেশত্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। দেশটির মাটিতে সংঘটিত ভয়াবহ উড়োজাহাজ দুর্ঘটনার তদন্ত কাজ চলমান থাকায় এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার এ সিদ্ধান্তের কথা জানায় তদন্ত সংশ্লিষ্ট বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ।
এমন এক সময় এ সিদ্ধান্ত এলো যখন ভয়াবহ এ উড়োজাহাজ দুর্ঘটনার কারণ খুঁজে বের করতে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ । এ ক্ষেত্রে, সম্ভাব্য সব কারণ খতিয়ে দেখা হবে বলে পুলিশের তরফ থেকে প্রকাশিত এক বার্তায় জানানো হয়।
এ অবস্থায় গতকাল বিধ্বস্ত উড়োজাহাজ বা এর মডেলে কোনো ক্রটি রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে তাৎক্ষণিকভাবে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানান দক্ষিণ কোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট চাউ সাং-মক।
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে এ উড়োজাহাজটি নিয়ে মানুষের মনে অনেক সন্দেহ দেখা দিয়েছে। তাই পরিবহন মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর উচিত এ মডেলের সব কটি উড়োজাহাজের সার্বিক বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা।’
এ অবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে দেশটির জিয়োননাম প্রদেশে অবস্থিত মুয়ান বিমানবন্দরের দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও তদন্ত কাজ চালায় প্রাদেশিক পুলিশ সংস্থা। একইসঙ্গে রাজধানী সিউলে অবস্থিত জেজু এয়ারের কার্যালয়েও অভিযান চালানো হয়।
এর পরিপ্রেক্ষেতে তারা বোয়িং ৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজের দুটি ব্ল্যাক বক্সের একটি থেকে প্রাথমিক কিছু তথ্য সংগ্রহ করতে পেরেছে বলে গত বুধবার কর্তৃপক্ষ জানায়। এর মধ্যে একটি বক্স দুর্ঘটনায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এটি বিশ্লেষণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হবে বলে জানা গেছে।।
একইসঙ্গে, বর্তমানে যাত্রী পরিবহনের কাজে নিয়োজিত দেশটির বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মডেলের উড়োজাহাজের সবগুলোই পরীক্ষা করে দেখছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে, আরও বেশি তথ্যের জন্য পুরো দেশের উড়োজাহাজ চলাচলের বিষয়টিই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে, দুর্ঘটনার জন্য পাখির সঙ্গে ইঞ্জিনের ধাক্কা, যান্ত্রিক ক্রটি এবং রানওয়ের শেষ প্রান্তে থাকা (৩০০ মিটারেও কম দূরত্বে) দেয়ালের সঙ্গে সংঘর্ষের মতো সম্ভাব্য কয়েকটি কারণের কথা উল্লেখ করেছে বিমান চলাচল সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞরা।
উল্লেখ্য, গত রবিবার জেজু বিমানের যাত্রীবাহী উড়োজাহাজের ফ্লাইট ২২১৬ দক্ষিণ কোরিয়ার মুয়ান বিমানবন্দরের রানওয়েতে বিধ্বস্ত হয়। থাইল্যান্ড থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার আসা উড়োজাহাজটিতে থাকা ১৮১ জন যাত্রী ও ক্রর মধ্যে ১৭৯ জনই নিহত হয়।
বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মডেলের এ উড়োজাহাজটি অবতরণ চাকা ছাড়াই রানওয়েতে অবতরণ করে। এর কিছুক্ষণ আগেই এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমে উড়োজাহাজের ইঞ্জিনের সঙ্গে পাখির সংঘর্ষের কথা জানায় পাইলট। পরবর্তীতে, রানওয়েতে নামার পর কিছুদূরের দেয়ালে গিয়ে ধাক্কা লাগে। সে সময় উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয় ও এতে আগুন ধরে যায়।
এটিই বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ার সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা। এর আগে ১৯৯৭ সালে এই বোয়িংয়েরই আরেকটি মডেল ৭৪৭ পাহাড়ি এলাকা গুয়ামে বিধ্বস্ত হয়। এ দুর্ঘটনায় তখন ২২৮ জন নিহত হয়।
সূত্র : আল-জাজিরা।