স্পেনের বন্যা : ভ্যালেন্সিয়াতে হাজার হাজার মানুষের বিক্ষোভ
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশিত: ২৩:০৬, ১০ নভেম্বর ২০২৪; আপডেট: ২৩:০৬, ১০ নভেম্বর ২০২৪
ভ্যালেন্সিয়া শহরে প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজারের মতো বিক্ষুব্ধ মানুষ রাস্তায় নেমে আসে।
স্পেনের ভ্যালেন্সিয়া শহরে হাজার হাজার বিক্ষুব্ধ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে। ভয়াবহ বন্যা নিয়ন্ত্রণে কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতার প্রতিবাদে গতকাল শনিবার বিক্ষোভ করে শহরের বাসিন্দারা।
এ সময় প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজারের মতো মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। ভ্যালেন্সিয়া ছাড়াও স্পেনের আরও বেশ কয়েকটি শহরেও একই রকমের বিক্ষোভ হয় বলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে, বিক্ষোভ চলাকালে ভ্যালেন্সিয়ার সিটি হলের সামনে বিক্ষোভাকারীদের একটি ছোট দলের সঙ্গে দাঙ্গা দমনকারী পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এ সময় বিক্ষোভকারীদের দমাতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ।
কিন্তু, বিক্ষোভকারীরা সে সময় ভ্যালেন্সিয়ার স্থানীয় সরকারপ্রধান কার্লোস ম্যাজোন ও স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজের পদত্যাগ দাবি করে। একইসঙ্গে, অনেক বিক্ষোভকারীকে প্রধানমন্ত্রী ও স্থানীয় সরকারের বিরুদ্ধে ‘খুনি, খুনি’ স্লোগান দিতে শোনা যায়।
এদিকে, এর কিছুদিন আগে ভ্যালেন্সিয়ার বাসিন্দারা কার্লোস ম্যাজোন ও স্পেনের রাজা ষষ্ঠ ফিলিপকে খুনি বলাসহ তাদের গায়ে কাঁদা ছিটিয়ে দেয়। বন্যায় শহরটির অবস্থা পরিদর্শনে এলে বিক্ষোভকারীরা প্রতিবাদ হিসেবে এ কাজ করে।
কারণ, বন্যায় এতো মানুষের মৃত্যুর জন্য কর্তৃপক্ষের অবহেলাকেই দায়ী করছে সাধারণ জনগণ। এক্ষেত্রে, ভ্যালেন্সিয়ার সরকারপ্রধান বন্যা বিষয়ে জরুরি সতর্কবার্তা জারি করতে অনেক দেরি করেছিলেন বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। কেননা, সে সময় এরইমধ্যে সেসব অঞ্চল ভয়াবহ বন্যায় তলিয়ে যেতে শুরু করে।
এছাড়া, ২৫ অক্টোবর থেকে ক্রমাগত ঝড়ের সতর্কবার্তা দিচ্ছিলো জাতীয় আবহাওয়া অধিদফতর । এ অবস্থায় স্থানীয় সরকারের আগেই অনেক পৌরসভা ও সংস্থা থেকে জরুরি সতর্কবার্তার মাত্রা বাড়ানো হতে থাকে।
একইসঙ্গে, গত ২৮ অক্টোবর ভ্যালেন্সিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এর কর্মীদের কাজে যেতে বারণ করে এবং বেশ কিছু টাউন হল থেকে বিভিন্ন এলাকার মানুষকে ঘরে ফিরে যেতে অনুরোধ করা হয়।
উল্লেখ্য, স্পেনে সংঘটিত ভয়াবহ এ বন্যায় এ পর্যন্ত ২২০ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। এর মধ্যে শুধু ভ্যালেন্সিয়া অঞ্চলেই এ সংখ্যা ২১২ জন। বাকি ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে পার্শ্ববর্তী কাস্তিলে-লা মাঞ্চা এবং আন্দালুসিয়ায়। তবে, প্রায় ৮০ জনের মতো এখনও নিখোঁজ রয়েছে এবং তাদের উদ্ধারে অনুসন্ধান চলছে।
এদিকে, বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতিতে জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকী বা এ ধরনের কোনো ছোঁয়াচে রোগ এখনও মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েনি বলে আঞ্চলিক স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে।
এর আগে ১৯৬৭ সালে পর্তুগালে হওয়া বন্যায় প্রায় ৫০০ মানুষের মৃত্যু হয়। এর পর স্পেনের এই বন্যাই ইউরোপে এ পর্যন্ত হওয়া সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা।
সূত্র : ডয়চে ভেলে।