অন্যান্য

লিবিয়ার বন্যায় মৃতের সংখ্যা নিয়ে অস্পষ্টতা

আবারও বাঁধ ভাঙ্গার আশঙ্কা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২১:৫৫, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩;  আপডেট: ২২:০০, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩

লিবিয়ার বন্যায় মৃতের সংখ্যা নিয়ে অস্পষ্টতা

ভয়াবহ বন্যার দু`দিন পর, ১২ সেপ্টেম্বর দারনা শহরের একাংশ।

লিবিয়ায় গত ১০ সেপ্টেম্বর সংঘটিত ঘূর্ণিঝড় ও বন্যায় নিহতের সংখ্যা নিয়ে অস্পষ্টতা দেখা দিয়েছে। সে সময় জাতিসংঘ থেকে নিহতের সংখ্যা ১১ হাজার ৩০০ বলে জানানো হয়। একইসঙ্গে আরও ১০ হাজার ১০০ জন নিখোঁজ বলেও জানায় সংস্থাটির অফিস ফর দ্য কোঅর্ডিনেশন অব হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাফেয়ার্স (ওসিএইচএ)।

কিন্তু পরবর্তীতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বরাত দিয়ে নিহতের সংখ্যা ৩ হাজার ৯৫৮ এবং আরও প্রায় ৯ হাজার জন নিখোঁজ বলে সম্প্রতি জানিয়েছে সংস্থাটি।

এছাড়া বর্তমানে লিবিয়ার পূর্ব দিকে আরও দুটি বাঁধ ভাঙ্গার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বলে সতর্ক করেছে ওসিএইচএ।

গত ১০ সেপ্টেম্বর লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ ঝড় ড্যানিয়াল আঘাত হানে। এর প্রভাবে দেশটির উপক‍‍ূলীয় দারনা শহরের আগে থেকেই নাজুক দুটি বাঁধ ভেঙ্গে যায়। বাঁধ থেকে উপচে পড়া লাখ লাখ কিউবিক মিটার পানিতে শহরটিতে ব্যাপক বন্যা দেখা দেয়। ভয়াবহ এ বন্যায় প্রচুর প্রাণহানিসহ সম্পদেরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।

একইসঙ্গে দেশটির পূর্বাঞ্চলের আরও বেশ কয়েকটি জায়গায় এর প্রভাবে প্রায় ১৭০ জনের প্রাণহানি হয়েছে বলে জানা যায়।

এদিকে মূলত লিবিয়ার রেড ক্রিসেন্টের তথ্যের ভিত্তিতে ওসিএইচএ থেকে প্রথমে নিহত ও নিখোঁজের সংখ্যা জানানো হয়েছিলো। কিন্তু সংস্থাটির লিবিয়াভিত্তিক মুখপাত্র তৌফিক আল-শুকরি এ সংখ্যা নাকচ করেন।

তিনি বলেন, ‘লিবিয়ার কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে এ সংস্থাটি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকৃত সংখ্যা জানানো হবে।’

তবে এ পর্যন্ত ৩ হাজার ২৮৩ জনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে বলে জানানো হয়। লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ওথমান আব্দেল জলিল এক সংবাদ সম্মেলনে গতকাল রবিবার এ তথ্য জানান।

এদিকে এক সপ্তাহ আগে দারনা শহরে সংঘটিত ভয়াবহ এ দুর্যোগের মারাত্মক প্রভাব এখনও শহরটিতে রয়ে গেছে। প্রায় ১ লাখ বাসিন্দার এ শহরটির বেশিরভাগ এলাকা বাঁধের পানিতে তলিয়ে গেছে।

একইসঙ্গে এ শহরসহ পূর্বাঞ্চলের অন্যান্য ঘূর্ণিঝড় ও বন্যাদুর্গত এলাকার বাসিন্দারা বর্তমানে পানিবাহিত নানা ধরনের রোগের মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বলে জাতিসংঘ থেকে সতর্ক করা হয়েছে।

এ অবস্থায় বর্তমানে আরও দুটি বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বলে ওসিএইচএ থেকে সতর্ক করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি বর্তমানে ঘূর্ণিঝড় বিধ্বস্থ দারনা এবং ওই এলাকার আরেকটি শহর বেনগাজির মাঝামাঝি অবস্থিত জাজা বাঁধ। অন্যটি বেনগাজির কাছাকাছি কাত্তারা বাঁধ বলে জানা যায়।

তবে দুটি বাঁধই বর্তমানে ভালো অবস্থায় এবং পুরোপুরিভাবে সচল রয়েছে বলে এ শহরগুলোর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সূত্রে দাবি করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, লিবিয়ার উপকূলীয় দারনা শহরের বিধ্বস্থ বাঁধ দুটি নিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরেই সতর্ক করে আসছিলেন বিশেষজ্ঞরা। ১৯৭০ সালে নির্মিত বাঁধ দুটি বন্যার কারণে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছিলো। এ কারণে এগুলো জরুরি ভিত্তিতে মেরামত করা প্রয়োজন বলে সে সময় সতর্ক করেন তারা।

সূত্র : ডয়চে ভেলে, আল-জাজিরা।