অন্যান্য

ভুল সংকেতকেই প্রাথমিকভাবে দায়ী কর্তৃপক্ষের

ভারতে ট্রেন দুর্ঘটনা

প্রকাশিত: ০২:২১, ৫ জুন ২০২৩;  আপডেট: ২১:১৪, ৭ আগস্ট ২০২৩

ভুল সংকেতকেই প্রাথমিকভাবে দায়ী কর্তৃপক্ষের

দুর্ঘটনায় লাইনচ্যুত ট্রেনের বগি। ছবি : সিএনএন।

ভারতের ওডিশা রাজ্যে সংঘটিত ট্রেন দুর্ঘটনার জন্য সংকেতের গরমিলকেই প্রাথমিকভাবে দায়ী করছে দেশটির রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। গতকাল রবিবার দেশটির রেলওয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন।

গত শুক্রবার ওডিশার বালাসোর জেলায় তিন ট্রেনের সংঘর্ষে ঘটা এ দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা প্রায় তিনশর কাছাকাছি পৌঁছেছে। আহত হয়েছে প্রায় এক হাজার।

এ ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে বলে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছেন। গত শনিবার দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সময় তিনি এ কথা বলেন।

এ সময় তিনি একে অত্যন্ত কষ্টকর বলে মন্তব্য করেন। একইসঙ্গে এ দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের দেখতে তিনি হাসপাতালে যান এবং তাদের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।

মূলত সংকেতের গরমিলের কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। ভারতের রেলওয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জয় ভার্মা রবিবার এ তথ্য দিয়েছেন।

দ্রুতগতির করমণ্ডল এক্সপ্রেস ট্রেনটিকে প্রথমে মূল লাইনে চলার সংকেত দেওয়া হলেও পরে তা পরিবর্তন করাকারণেই দুর্ঘনাটি ঘটে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

প্রকৃত তথ্য উদঘাটনে এরইমধ্যে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।

দুর্ঘটনাস্থলে উদ্ধারকর্মীদের তৎপরতা। ছবি : সিএনএন।

করমণ্ডল এক্সপ্রেসকে মূল লাইনে চলার সংকেত দেখিয়ে তা উঠিয়ে নেওয়ার পরপরই ট্রেনটি পাশের একটি লুপ লাইনে ঢুকে পরে। এ সময় সেখানে আগে থেকেই অবস্থান করা একটি মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে এই ট্রেনটির সজোরে ধাক্কা লাগে।

এ সংঘর্ষের ফলে করমণ্ডট্রেনের বগিগুলো লাইনচ্যুত হয় এবং পাশের আরেকটি লাইন দিয়ে আসা দ্রুতগতির হাওড়া সুপারফাস্ট নামের আরেকটি ট্রেনের সঙ্গে লাইনচ্যুত বগির ধাক্কায় ওই ট্রেনটির কয়েকটি বগিও লাইনচ্যুত হয়।

এ ঘটনার সময় করমণ্ড ট্রেনটি কলকাতা থেকে চেন্নাই যাচ্ছিলো। পাশের লাইন দিয়ে হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস ট্রেনটি বিপরীত দিকে  যশোবন্তপুর থেকে হাওড়া যাচ্ছিলো বলে জানা গেছে।

যাত্রীবাহী এ ট্রেনদুটিতে এ সময় প্রায় ২ হাজারের মতো যাত্রী ছিলো বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর মধ্যে অনেকে ছিলেন বাংলাদেশি। বাংলাদেশিদের মধ্যে অনেকে আহত হলেও এখনও পর্যন্ত নিহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। আহতদের বর্তমানে ওডিশার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

শনিবারই দুর্ঘটনাস্থলে উদ্ধার কাজ সমাপ্ত ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। এ সময় বিধ্বস্ত ট্রেনের বগিগুলোর মধ্যে আটকে পড়া সব যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানানো হয়। দুর্ঘটনাস্থল থেকে ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে শিগরিই এ লাইনে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করা হবে বলেও জানানো হয়।  

উল্লেখ্য, এর আগে ১৯৮১ সালে ভারতে আরেকটি ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে। তখন দেশটির বিহার রাজ্যে লাইনচ্যুত হয়ে যাত্রীবাহী একটি ট্রেন পাশের নদীতে পড়ে। সে সময় ওই এলাকায় সাইক্লোন হচ্ছিলো। মূলত এর আঘাতেই ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়। এ দুর্ঘটনায় সে সময় প্রায় ৮০০ জন নিহত হয়।

সূত্র : বিবিসি, আল-জাজিরা।