ঘূর্ণিঝড় মোখা : মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যকে দুর্যোগকবলিত এলাকা ঘোষণা
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশিত: ২২:৩৬, ১৫ মে ২০২৩; আপডেট: ২১:৩২, ২২ মে ২০২৩
রাখাইন রাজ্যে ঝড়ের আঘাতে বিধ্বস্ত ঘরবাড়ি।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যকে আজ সোমবার দুর্যোগকবলিত এলাকা ঘোষণা করেছে দেশটির জান্তা সরকার। গতকাল রবিবার ঘূর্ণিঝড় মোখা আঘাত হানার পর আজ এ ঘোষণা দেওয়া হলো। এ ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে দেশটিতে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৬ জন নিহত হয়েছে।
বঙ্গোপসাগরে গত এক শতাব্দিতে সৃষ্টি হওয়া ঝড়গুলোর মধ্যে ঘূর্ণিঝড় মোখা ছিলো সবচেয়ে শক্তিশালী। রবিবার বেলা বারোটা নাগাদ এটি মূলত বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকার উপর দিয়ে গিয়ে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ব্যাপক শক্তিতে আঘাত করে।
ক্যাটাগরি ৫ মাত্রার এ ঝড়ের আঘাতে মিয়ানমারের উপকূলীয় এ রাজ্যে শত শত ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়। এ সময় ঝড়ের কারণে টেলিফোনের টাওয়ার উপড়ে পড়া, ঘরের ছাদ উড়ে যাওয়া এবং ভবনের উপর বিলবোর্ড ভেঙ্গে পড়ার মতো ঘটনা ঘটে বলে বিভিন্ন গণ্যমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়।
বিশেষ করে রাজ্যটির রাজধানী সিট্টুয় নিচু এলাকা হওয়ায় সেখানে ঝড়ের কারণে সৃষ্ট ভারী বৃষ্টিপাত ও জোরালো বাতাসের কারণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ওই এলাকাতেই ঝড়ের আঘাতে এ পর্যন্ত ৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
এ ছাড়াও এ রাজ্যের প্রায় ৯০ শতাংশ শহরেই ঘূর্ণিঝড় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায় বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন। ঘণ্টায় ২০৯ কিলোমিটার গতিতে ঝড়টি আঘাত করার কারণে ওই এলাকার যোগাযোগ সঞ্চালন তার বিচ্ছিন্ন হওয়াসহ বহু গাছপালা ভেঙ্গে পড়ে।
একইসঙ্গে ঝড়ের কারণে রাখাইন রাজ্যজুড়ে স্কুল ভবন, মঠ এবং হাসপাতালসহ ৫শর বেশি ভবন বিধ্বস্ত হয়েছে বলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে।
তবে এখনও ওইসব এলাকায় খারাপ আবহাওয়া বিরাজ করায় এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি না হওয়ায় পুরোপুরিভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যাচ্ছে না বলে জাতিসংঘের মানবাধিকার সাহায্য সংস্থার কর্মকার্তারা জানান।
এ বিষয়ে সংস্থাটি থেকে সম্প্রতি প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘যদিও এখনও পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত পরিমাণ সম্পর্কে জানা যাচ্ছে না, কিন্তু এ পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ওই এলাকা ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। এ অবস্থায় রাজ্যটিতে বসবাস করা অসহায় মানুষজন বিশেষ করে বাস্তুচ্যুতদের বর্তমানে প্রচুর ত্রাণসাহায্য প্রয়োজন।’
উল্লেখ্য, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঘূর্ণিঝড় দিন দিন যেমন শক্তিশালী হচ্ছে তেমনি এর হারও বাড়ছে বলে বিজ্ঞানীরা জানান। এ অবস্থায় সম্প্রতি মিয়ানমারে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড়গুলোর মধ্যে মোখা সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী ছিলো বলে জাতিসংঘ থেকে জানানো হয়।
সূত্র : বিবিসি।