পাইলট কোনো অসঙ্গতির কথা জানান নি : কর্তৃপক্ষ
নেপালে বিমান দুর্ঘটনা
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশিত: ২৩:০৬, ১৭ জানুয়ারি ২০২৩
সোমবার দুর্ঘটনা কবলিত এলাকা থেকে বিমানটির বিধ্বস্ত অংশ উদ্ধার করা হয়।
নেপালে গত রবিবার সংঘটিত বিমান দুর্ঘটনার আগে পাইলট (বিমান চালক) বিমানটির কোনো ধরনের অসঙ্গতি বা যান্ত্রিক গোলযোগের কথা জানান নি। বিমানবন্দরে অবতরণের আগ মুহূর্তে আবহাওয়াও অনুকূল ছিলো বলে পাইলট উল্লেখ করেন। গতকাল সোমবার অনুপ যোশি নামের এক মুখপাত্র এসব তথ্য জানিয়েছেন।
রবিবার ৭২ জন যাত্রী নিয়ে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে পর্যটন শহর পোখারা যাওয়ার সময় ইয়েতি এয়ারলাইনসের এ বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। এ দুর্ঘটনায় বিমানের কোনো যাত্রী বেঁচে নেই বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এ অবস্থায় নেপালের প্রধানমন্ত্রী সোমবার দেশটিতে জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করেন।
এদিকে বিমানটি অবতরণের ঠিক আগ মুহূর্তে হঠাৎই একদিকে কাত হয়ে পড়ে যেতে শুরু করে এবং বিমান বন্দরের মাত্র এক কিলোমিটার দূরে সেতি নামক নদীর পাড়ে আছড়ে পড়ে বলে মোবাইল ফোনে ধারণ করা একটি ফুটেজে দেখা যায়।
তবে বিমানটি অবতরণের আগ মুহূর্তে পূর্ব নির্ধারিত ৩ নম্বর রানওয়ের বদলে ১ নম্বরে রানওয়েতে অবতরণের নির্দেশ দেওয়া হয় এবং পাইলট তাতে সম্মত হন বলে অনুপ যোশি জানান।
তিনি বলেন, ‘আমরা যেকোনো রানওয়েতে অবতরণের জন্যই প্রস্তুত ছিলাম। বিমানটিও অবতরণের জন্য প্রস্তুত ছিলো। মাত্র ১৫ দিন আগে আমরা বিমানবন্দরটি চালু করেছি। এরইমধ্যে এ দুর্ঘটনাটি ঘটলো, যা খুবই দুঃজনক।’
সোমবার দুর্ঘটনা কবলিত এলাকা থেকে বিমানটির বিধ্বস্ত অংশ উদ্ধার করা হয়। তখনও ওই এলাকায় বাতাসে আগুনের ধোঁয়ার গন্ধ ছিলো। চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিলো বিমানের ছিন্নভিন্ন অংশ।
এ সময় ধ্বংসাবশেষ থেকে নেপালের পুলিশ বিমানের ব্ল্যাক বক্সসহ ভয়েস রেকর্ডার উদ্ধার করেছে বলে জানা গিয়েছে। এর সাহায্যে দুর্ঘটনার কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানানো হয়। এ ক্ষেত্রে ঘটনার সত্যতা উদঘাটনে সরকার একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বলে যোশি জানান।
উল্লেখ্য, নেপালে প্রায়ই বিমান দুর্ঘটনা ঘটলেও এটিকে গত ৩০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বলা হচ্ছে। বিমানটিতে থাকা যাত্রীদের মধ্যে ৫৩ জন নেপালের, ৫ জন ভারতের, ৪ জন রাশিয়ার এবং ২ জন কোরিয়ার নাগরিক ছিলেন। এছাড়াও আয়ারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, আর্জেন্টিনা এবং ফ্রান্সেরও একজন করে নাগরিক ছিলেন বলে জানা গেছে। বাকি চারজন ছিলেন বিমানের ক্র।
বিশ্বের সবচেয়ে মনোরম হিমালয় পর্বতমালার অনেকাংশই নেপালে অবস্থিত। কিন্তু এসব পর্বতমালাই প্রায় সময় বিমান চলাচলে বাধার সৃষ্টি করে। এছাড়া যত্রতত্র রানওয়ে তৈরি করা বা হঠাৎ আবহাওয়ার বৈরি আচরণ দেশটিতে বিমান দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অন্যদিকে, নতুন উড়োজাহাজের জন্য পর্যাপ্ত বিনিয়োগ ও যথাযথ পরিচালনার অভাবও এসব দুর্ঘটনার কারণ বলে অভিযোগ রয়েছে।
সূত্র : বিবিসি।