লাইফস্টাইল

নতুন আতঙ্ক এইচএমপিভি ভাইরাস : জেনে নিন জরুরি কিছু তথ্য

লাইফস্টাইল ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৪:৪৮, ৫ জানুয়ারি ২০২৫;  আপডেট: ১২:১৮, ৬ জানুয়ারি ২০২৫

নতুন আতঙ্ক এইচএমপিভি ভাইরাস : জেনে নিন জরুরি কিছু তথ্য

এইচএমপিভি মূলত শ্বাসতন্ত্রের রোগ সৃষ্টিকারী একটি ভাইরাস।

চীনে ছড়িয়েছে এইচএমপিভি (HMPV) ভাইরাস। কোভিড-১৯ মহামারির পর নতুন করে এইচএমপিভি মহামারি আকারে দেখা দিতে পারে বলে বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকরা অবশ্য বলছেন, ২০২৫ সালে কোভিডের মতো আরেকটি মহামারির আশঙ্কা রয়েছে; তবে, এইচএমপিভিই যে এর কারণ হবে, তা এখনো নিশ্চিত করে বলা যাবে না।

বিজ্ঞানীরা অন্তত ১১ রকমের রোগের আশঙ্কাকে এ তালিকায় রেখেছেন। তারা মনে করছেন, এগুলোর মধ্যে যে-কোনো একটি হয়তো ২০২৫ সালে নতুন করে মহামারি আকার ধারণ করতে পারে।

তবে, বর্তমানে চীনে এইচএমপিভি ভাইরাসের সংক্রমণ ব্যাপক হারে বাড়ছে। একই অবস্থা অবশ্য দেখা দিয়েছে জাপানেও। এ পরিস্থিতিতে আপাতত এইচএমপিভি ভাইরাস নিয়েই দেশগুলো চিন্তিত। এ অবস্থায় নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে দেখে নিতে পারেন এইচএমপিভি ভাইরাস এবং এ থেকে সুরক্ষার সাধারণ কিছু তথ্য।

এইচএমপিভি ভাইরাস কী বা কেমন
এইচএমপিভি (হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস) হলো শ্বাসতন্ত্রের রোগ সৃষ্টিকারী একটি ভাইরাস।

এইচএমপিভি সংক্রমণের সাধারণ লক্ষণ বা উপসর্গ
সাধারণত এটি সাধারণ ফ্লু এবং কোভিড-১৯ এর মতোই উপসর্গ তৈরি করে। অর্থাৎ, এ ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটলে সর্দি, কাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্ট বা গলা ব্যথার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। ব্যক্তিভেদে এ চিত্র ভিন্নও হতে পারে।

কীভাবে ছড়ায়
সাধারণ সর্দি-জ্বর বা কোভিডের মতোই একজনের দেহ থেকে অন্যজনের মধ্যে ছড়াতে পারে। হাঁচি বা কাশির সঙ্গে নির্গত সূক্ষ্ণ কণার সঙ্গে এর জীবাণু সহজেই ছড়িয়ে পড়তে পারে। চোখ, নাক বা ত্বকের মাধ্যমে দেহে প্রবেশ করতে পারে।

এইচএমপিভি সংক্রমণ কতোটা ক্ষতিকর
সাধারণত মৃদু, তবে সবার ক্ষেত্রে সমান প্রভাব ফেলে না। অনেক ক্ষেত্রে শ্বসনতন্ত্রের দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি করতে পারে। ব্রঙ্কাইটিস বা নিউমোনিয়ার মতো নানা ধরনের জটিলতা দেখা দিতে পারে। রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা কমিয়ে দেওয়ার নজির রয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে (যেমন- জটিল অন্য কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা থাকলে) মৃত্যুর ঘটনাও বিভিন্ন সময়ে দেখা গেছে।

প্রতিরোধ বা সুরক্ষার উপায়
সাধারণ সর্দি-জ্বর বা কোভিডের সংক্রমণ রোধে নেওয়া ব্যবস্থাই অনুসরণ করতে বলছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। অর্থাৎ, হাত পরিষ্কার রাখা, সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকা, মাস্ক ব্যবহার করা ইত্যাদি।

এইচএমপিভির টিকা আছে কি?
না। ২০০১ সালে প্রথম শনাক্ত হলেও এখন পর্যন্ত এর কোনো টিকা উদ্ভাবিত হয়নি।

তাহলে এর চিকিৎসা কী?
এখন পর্যন্ত সাধারণ ফ্লুর চিকিৎসাই প্রয়োগ করা হচ্ছে।

কারা বেশি ঝুঁকিতে?
শিশু, বৃদ্ধ এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যাদের কম, তাদেরই এতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।

এইচএমপিভি কি নতুন কোনো ভাইরাস?
না। সম্প্রতি চীনে বেশ বড় আকারে ছড়িয়েছে বলে বিশ্বজুড়ে এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। ২০০১ সালে নেদারল্যান্ডের গবেষকরা
শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণের শিকার শিশুদের ওপর গবেষণা চালিয়ে প্রথমবারের মতো এ ভাইরাসের সন্ধান পান। তবে, গবেষকদের মতে, এ ভাইরাস অন্তত ৬ দশক ধরে বিরাজমান।

এইচএমপিভি কি অন্যান্য দেশেও ছড়াতে পারে?
অবশ্যই। যেহেতু ছোঁয়াচে ধরনের রোগ, তাই ছড়িয়ে পড়া কঠিন নয়। এ আশঙ্কায় এরই মধ্যে কম্বোডিয়া ও তাইওয়ান এ ব্যাপারে সতর্ক অবস্থান নিয়েছে। ভারত জানিয়েছে, তারাও এ রোগ মোকাবিলায় প্রস্তুত। তবে, দেশটির কিছু গণমাধ্যম অভিযোগ করেছে, চীন এ রোগের ব্যাপারে সব তথ্য জানাচ্ছে না। এ ব্যাপারে ভারত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

এগুলো এইচএমপিভি ভাইরাস, এর প্রভাব এবং এর থেকে সুরক্ষা সম্পর্কে সচেতনতার জন্য দরকারি সাধারণ কিছু তথ্য। তবে, স্বাস্থ্যগত যে-কোনো বিষয়েই সময়মতো চিকিৎসক বা স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

তথ্যসূত্র : ইনডিপেনডেন্ট, ফার্স্ট পোস্ট ও রয়টার্স।