বিশ্বে প্রতি ৬ জনে ১ জন বন্ধ্যাত্বের শিকার : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ২০:৩৮, ৬ এপ্রিল ২০২৩; আপডেট: ২০:৩৯, ৬ এপ্রিল ২০২৩
বন্ধ্যাত্বকে বর্তমানে বৈশ্বিক পর্যায়ে জনস্বাস্থ্যের একটি অন্যতম সমস্যা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। প্রতীকী ছবি।
সারা বিশ্বে প্রতি ৬ জনের মধ্যে অন্তত ১ জন বন্ধ্যাত্বের সমস্যায় ভুগছেন বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থাটি তাদের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, এ সঙ্কটে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা এতো বেশি হওয়ার অর্থ হচ্ছে, সমস্যাটি এখন অত্যন্ত সাধারণ ব্যাপার হয়ে উঠেছে। ১৯৯০ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত বন্ধ্যাত্বের ওপর প্রকাশিত ১৩৩টি গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য পর্যালোচনা করে এ তথ্য দিয়েছে ডব্লিউএইচও।
সাধারণত এক বছর চেষ্টার পরও গর্ভধারণে অক্ষমতাকে বন্ধ্যাত্ব বা ইনফার্টিলিটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ডব্লিউএইচওর বন্ধ্যাত্ব বিষয়ক গবেষক ও বিজ্ঞানী ড. গিটাও মাবরু বলেছেন, জীবনের কোনও না কোনও সময়ে বন্ধ্যাত্বের ঘটনা (লাইফটাইম ইনফার্টিলিটি) বিশ্বের সব অঞ্চল ও দেশে একরকম। কোন অঞ্চলের দেশ অথবা ধনী বা দরিদ্র শ্রেণির মানুষ - বন্ধ্যাত্বের ওপর এসব চলকের কোনও প্রভাব দেখা যায়নি। বন্ধ্যাত্বের হার উচ্চ আয়ের দেশগুলোতে ১৭.৮ শতাংশ এবং নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে ১৬.৫ শতাংশ। অঞ্চলভেদেও এ হারে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। তবে ডব্লিউএইচও বলছে, এ পার্থক্য যথেষ্ট বা উল্লেখযোগ্য নয়।
ড. মাবরু বলেন, আয়ের সঙ্গে বন্ধ্যাত্বের সম্পর্ক না থাকলেও এর চিকিৎসা নেওয়ার ক্ষেত্রে তা (আয়) একটি বড় ইস্যু। বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসায় বিশ্বব্যাপী বৈষম্য রয়েছে। বেশি আয়ের দেশগুলোতে বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসা সহজলভ্য এবং অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল ব্যক্তিরা সহজেই এর সুবিধা নিতে পারেন। কিন্তু কম আয়ের দেশগুলোতে এই চিত্র একেবারেই বিপরীত। সেখানে এসব চিকিৎসা এতোটা সহজলভ্য নয়। এ ছাড়া কম আয়ের মানুষদের তাদের রোজগারের অনেক বড় একটা অংশই এই চিকিৎসার পেছনে খরচ হয়ে যায়।
বন্ধ্যাত্বকে বর্তমানে বৈশ্বিক পর্যায়ে জনস্বাস্থ্যের একটি অন্যতম সমস্যা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। তবে এ নিয়ে দুই ধরনের মত প্রচলিত রয়েছে। কেউ কেউ মনে করেন, জনসংখ্যা বেড়ে যেহেতু চাপ তৈরি হচ্ছে, তাই বন্ধ্যাত্বের ঘটনা বরং এখানে ইতিবাচক প্রভাবই ফেলে। তবে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সন্তান ও পরিবার বিশ্বের সব অঞ্চলের ও সব মানুষের একটি মৌলিক আকাঙ্ক্ষা। তাই বন্ধ্যাত্বের এই উচ্চহারকে জনস্বাস্থ্যের জন্য বৈশ্বিক সঙ্কট হিসেবে দেখতে হবে এবং এর চিকিৎসার পেছনে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে যেন তা সব মানুষের কাছে সহজলভ্য করে তোলা যায়।
সূত্র : সিএনএন।