প্রশান্ত মহাসাগরে আবারো `লা নিনা`
জলবায়ু ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৩:৫৯, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২; আপডেট: ০১:০৯, ২৯ অক্টোবর ২০২২
টানা তিন বছর এমনটি ঘটার ঘটনাও এ পর্যন্ত মোট তিনবার ঘটলো। ছবি : নাসা।
প্রশান্ত মহাসাগরে এ বছর আবারো 'লা নিনা'র সৃষ্টি হয়েছে। এ অঞ্চলে এ নিয়ে টানা তৃতীয় বছরের মতো এমন ঘটলো বলে আজ মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়ার আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে। এ ছাড়া টানা তিন বছর এমনটি ঘটার ঘটনাও এ পর্যন্ত মোট তিনবার ঘটলো।
প্রশান্ত মহাসাগরের পানির তাপমাত্রা ও সেখানকার বাতাস প্রবাহের গতিবিধির মোট তিনটি পর্যায় রয়েছে। এই তিনটি পর্যায়কে একসঙ্গে 'এল নিনো সাউদার্ন ওসিলেশন' বলে। ওই অঞ্চলের তাপমাত্রার এই তিনটি পর্যায়ে পানির তাপমাত্রা উষ্ণ থেকে শীতল অবস্থায় রূপান্তরিত হয়। লা নিনা হলো ওই তিনটি পর্যায়ের মধ্যে একটি। এ পর্যায়ে পানির তাপমাত্রা খুব কম থাকে অর্থাৎ পানি শীতল থাকে। আরেকটি পর্যায় হলো 'এল নিনো' যখন তাপমাত্রা উষ্ণ থাকে। অন্য পর্যায়টিতে পানির তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকে।
উষ্ণ থেকে শীতল পর্যায়ে এ পরিবর্তন ঘটতে সাধারণত ৩ থেকে ৭ বছর সময় লাগে। তবে সেখানকার তাপমাত্রা টানা তিন বছর ধরে শীতল অর্থাৎ লা নিনা পর্যায়ে অবস্থানের ঘটনা এ শতাব্দিতে এ নিয়ে মোট ৩ বার ঘটলো। বিরল এ ঘটনাকে বিজ্ঞানীরা 'ট্রিপল ডিপ' বলে অভিহিত করেছেন। ১৯৫০ সাল থেকে সেখানকার তাপমাত্রার রেকর্ড রাখা শুরুর পর 'ট্রিপল ডিপ লা নিনা' ঘটেছে প্রথমবার ১৯৭৩-১৯৭৫ সালে এবং দ্বিতীয়বার ১৯৯৮-২০০১ সালে।
প্রভাব ফেলবে বিশ্বজুড়ে
লা নিনার প্রভাবে গোটা বিশ্বেরই আবহাওয়ার গতিবিধি পাল্টে যায়, তবে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হয় অস্ট্রেলিয়া। এর প্রভাবে অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব, উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের এলাকাগুলোতে গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেড়ে যায়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, টানা তৃতীয় বছরের মতো লা নিনার প্রভাবে অস্ট্রেলিয়ায় বৃষ্টিপাত ও বন্যার পরিমাণ বাড়তে পারে। একদিকে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি অন্যদিকে আবার পূর্ব আফ্রিকায় শুষ্কতা বেড়ে যাওয়ারও ঝুঁকি রয়েছে। জাতিসংঘের মতে ইথিওপিয়া, কেনিয়া ও সোমালিয়া আকস্মিক মানবিক সঙ্কটে পড়ার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
এ ছাড়া লা নিনার প্রভাবে শরতের শেষভাগে ও শীতের শুরুতে আটলান্টিক মহাসাগরে উচ্চচাপের সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে যা আশেপাশের এলাকাগুলোর আবহাওয়ার ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে। এর প্রভাবে যুক্তরাজ্যে শীতকালে আবহাওয়া অতিরিক্ত ঠাণ্ডা হতে পারে। একই পূর্বাভাস করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রেও।
এ ছাড়াও লা নিনার প্রভাবে সমুদ্রের কাছাকাছি বা উপকূলবর্তী দেশগুলোতে ঘূর্ণিঝড়ের হার বাড়তে পারে বলেও বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন।
সূত্র : বিবিসি।