সমাজে অবদান রাখতে হবে : সিডব্লিউইউর নবীনবরণে কানাডার হাইকমিশনার
শিক্ষা ও ক্যারিয়ার ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৬:২৭, ১৭ জুলাই ২০২২; আপডেট: ০১:১৬, ২৯ অক্টোবর ২০২২
সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটির নবীনবরণ অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার ড. লিলি নিকোলস।
নিজেদের শিক্ষিত করে তোলা খুব জরুরি। শিক্ষিত হয়ে সমাজ ও দেশের উন্নয়নের জন্য অবদান রাখতে হবে। কখনো চ্যালেঞ্জ নিতে ভয় পাওয়া যাবে না। সফল হতে হলে ধৈর্যসহ লেগে থাকাটা খুব দরকার। এই গুণটি কখনো হারিয়ে ফেলা যাবে না।
সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটি (সিডব্লিউইউ)-এর নবীনবরণ অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে এ কথা বলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার ড. লিলি নিকোলস। রাজধানীর হাটখোলায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আজ রবিবার বেলা ১১:০০টায় আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন লিলি নিকোলস। অনুষ্ঠানে ফল-২০২২ সেমিস্টারে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের এক সাংস্কৃতিক আয়োজনের মধ্য দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে নবীনদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. পারভীন হাসান, রেজিস্ট্রার ইলিয়াস আহমেদ, ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান কাজী জাহেদুল হাসান, ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড লিটারেচার বিভাগের চেয়ারপারসন আবদুস সেলিম, বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিভাগের চেয়ারপারসন হাসান শিরাজী, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারপারসন মোছাঃ শাহনাজ পারভীন, সোশিওলজি অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারপারসন ড. ফজিলা বানু লিলি, জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারপারসন সজীব সরকার এবং বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের লেকচারার জারিন তাসনিম।
হাইকমিশনার বলেন, 'বাংলাদেশ একটি চমৎকার দেশ। গত ৫০ বছরে বাংলাদেশ অভাবনীয় উন্নতি করেছে যা কেউ ভাবতে পারেনি। এমন একটি দেশে এমন একটি সময়ে তোমরা জন্মেছ, এটা খুব ভাগ্যের ব্যাপার।' তিনি আরো বলেন, 'বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই কানাডার সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে এবং এই সম্পর্ক এখন আরো গভীর। আমরা দুই দেশই মানবাধিকার প্রতিষ্ঠাসহ নানা বিষয়ে সমমনা।'
নবীনদের উদ্দেশ্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. পারভীন হাসান বলেন, 'আমরা চাই তোমরা যেন লেখাপড়া করে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারো। আমাদের শিক্ষকদের সবাই খুব যোগ্য, মেধাবী ও নিবেদিতপ্রাণ। তোমাদের সহযোগিতা করতে তারা সবসময় প্রস্তুত। তোমরা শিক্ষকদের সাথে সবসময় যোগাযোগ রাখবে। তারা সবসময় তোমাদের সঠিক দিকনির্দেশনা দেবেন। তোমাদের অভিভাবকদেরও ধন্যবাদ দিতে চাই, তারা এই বিশ্ববিদ্যালয়কে তোমাদের পড়ালেখার জন্য বেছে নিয়েছেন। এখন আমি তাদের অনুরোধ করবো, আপনারা আপনাদের মেয়েদের পড়াশোনা সফলভাবে শেষ হওয়া পর্যন্ত সহযোগিতা করবেন। তারা যেন মাঝপথে ঝরে না পড়ে।'
রেজিস্ট্রার ইলিয়াস আহমেদ বলেন, 'সম্মানিত অতিথি হিসেবে ড. লিলি নিকোলস আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছেন, তাকে ধন্যবাদ। তার মতো একজন ব্যক্তির উপস্থিতি আমাদের সবার জন্য অনুপ্রেরণার। আমি আশা করবো, ভবিষ্যতেও তাকে আমরা আমাদের সাথে পাবো।'
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য তুলে ধরে ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান কাজী জাহেদুল হাসান বলেন, 'আমরা চেয়েছি কম খরচে যেন মেয়েরা মানসম্পন্ন শিক্ষা পেতে পারে। এ উদ্দেশ্য নিয়েই এই বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করে। আমরা আমাদের লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছি। নিশ্চিত করতে চেষ্টা করছি, তোমরা যেন দরকারি সব সুযোগ-সুবিধা এখানে পেতে পারো।'
ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড লিটারেচার বিভাগের চেয়ারপারসন আবদুস সেলিম বলেন, 'আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি লক্ষ্য হলো নারীর ক্ষমতায়ন। এজন্য শিক্ষা খুব গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সময়কে কাজে লাগিয়ে তোমরা এগিয়ে যাবে।'
বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিভাগের চেয়ারপারসন হাসান শিরাজী বলেন, 'উদ্যোক্তা হওয়াসহ ব্যবসায় শিক্ষার নানা খাতে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত হয়ে উঠতে সবরকম সুযোগ এই বিভাগে রয়েছে। যারা এই বিভাগে ভর্তি হয়েছো, তোমাদের ক্যারিয়ার গড়ার জন্য এই বিভাগ সবসময় সহযোগিতা করবে।'
কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারপারসন মোছাঃ শাহনাজ পারভীন বলেন, 'নারীর ক্ষমতায়নের মাধ্যমে আমরা দেশকে গৌরবান্বিত করতে চাই। শিক্ষার মাধ্যমে এটি সম্ভব। তোমরা নিজেদের শিক্ষিত ও যোগ্য করে তুলবে।'
সোশিওলজি অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারপারসন ড. ফজিলা বানু লিলি বলেন, 'আমরা নারীর ক্ষমতায়ন নিয়েই কাজ করছি। আশা করছি বিশ্বের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথেও আমরা একসাথে কাজ করতে পারবো।'
জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারপারসন সজীব সরকার বলেন, 'জীবনে দুটি জিনিস হওয়ার সুযোগ আছে : 'কিছু' হওয়া, আর 'কিছু না' হওয়া। আপনাদের 'কিছু' হতে হবে এবং এজন্য ক্ষমতায়ন দরকার। আর শিক্ষা আপনাদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে পারে। তবে শিক্ষা কেবল ক্লাসরুমেই পাওয়া যায়, তা নয়; ক্লাসরুমনির্ভর হয়ে না থেকে চারপাশের জগৎ থেকেও জীবনের জন্য দরকারি বিষয়গুলো শিখতে হবে।'
অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, 'পৃথিবীর অনেক নারী নোবেলসহ অনেক বড় পুরস্কার পেয়ে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করেছেন। তোমরাও নিজেদের যোগ্য করে তুলবে এবং সামনে এগিয়ে যাবে। শিক্ষার মাধ্যমেই নারীর ক্ষমতায়ন সম্ভব।'
অনুষ্ঠান শেষে হাইকমিশনার ড. লিলি নিকোলসকে উত্তরীয় পরিয়ে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মারক ক্রেস্ট উপহার দেন ড. পারভীন হাসান। অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক পর্বে অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পিংকি রানি দাস ও হামিদা সরকার। শিক্ষার্থীদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন ফারহিন মাহবুব, জান্নাতুল ফেরদৌস শানু ও আছিয়া খাতুন। অভিভাবকদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আঁখি সরকার।
অনুষ্ঠানটির গণমাধ্যম সহযোগী ছিলো দীপ্ত টেলিভিশন।