এমিরাটস গ্রুপের রেকর্ড পরিমাণ মুনাফার ঘোষণা
অর্থ ও বাণিজ্য ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৩:১৩, ১৩ মে ২০২৪; আপডেট: ২৩:১৯, ১৩ মে ২০২৪
পর পর দুই বছর রেকর্ড মুনাফার পরিমাণ মধ্য দিয়ে করোনা মহামারির সময়কার ক্ষতিও পুষিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
মধ্যপ্রাচ্যের দুবাইভিত্তিক প্রতিষ্ঠান এমিরাটস গ্রুপ রেকর্ড পরিমাণ মুনাফার ঘোষণা দিয়েছে। বার্ষিক ৫ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার মুনাফার মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি এ রেকর্ড করে। আজ সোমবার প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে এসব তথ্য জানানো হয়।
এর মধ্য দিয়ে এমিরাটস গ্রুপ তাদের গত বছরের ৩ বিলিয়ন ডলার মুনাফার পরিমাণকে ছাড়িয়ে গেছে। একইসঙ্গে, পর পর দুই বছর রেকর্ড পরিমাণ মুনাফার মধ্য দিয়ে করোনা মহামারির সময়কার ক্ষতিও পুষিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
এমিরাটস গ্রুপের বিভিন্ন ব্যবসার মধ্যে শুধু এয়ারলাইন ব্যবসাতেই এ বছর মুনাফার পরিমাণ ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার, যা মোট মুনাফার ৬৩ শতাংশ। এছাড়া, এর বিমানবন্দর সেবা প্রতিষ্ঠান ডিনাটার মুনাফার পরিমাণ ৪০০ মিলিয়ন ডলার।
এ বিষয়ে এমিরাটস গ্রুপের প্রধান নির্বাহী শেখ আহমেদ বিন সাঈদ আল মাকতুম এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এমিরাটস গ্রুপ আরও একবার রেকর্ড পরিমাণ মুনাফা করতে সক্ষম হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির এ আর্থিক সাফল্য আমাদেরকে ভবিষ্যত প্রবৃদ্ধি ও সাফল্যের ক্ষেত্রে একটি শক্ত অবস্থানে নিয়ে যাবে বলে আশা করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এর মধ্য দিয়ে আমরা উন্নত পণ্য ও সেবায় বেশি পরিমাণে বিনিয়োগ করতে ও তা আমাদের ভোক্তা ও অংশীদারদের কাছে পৌঁছে দিতে সক্ষম হবো।’
রাষ্ট্রায়ত্ত্ব প্রতিষ্ঠান এমিরাটস গ্রুপের এয়ানলাইন শাখা সারা বিশ্বের মধ্যে বর্তমানে সবচেয়ে বড় উড়োজাহাজ চলাচলকারী প্রতিষ্ঠান। ফলে, গত বছরের অক্টোবর থেকে চলমান ইসলায়েল-হামাস যুদ্ধের কারণে মধ্যপ্রাচ্যে মাসের পর মাস ধরে বিদ্যমান রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেও রেকর্ড পরিমাণ মুনাফা করতে সক্ষম হলো প্রতিষ্ঠানটি।
সামাজিক-রাজনৈতিক পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট অস্থির এ পরিবেশের কথা উল্লেখ করে, এর মধ্যেও প্রতিষ্ঠানটির এ সাফল্যের কারণ হিসেবে শেখ আহমেদ বলেন, ‘আমাদের ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গি সব সময় ইতিবাচক। সামনের মাসগুলোতেও মানুষের উড়োজাহাজ ভ্রমণের অনেক চাহিদা থাকবে বলেই আমরা প্রত্যাশা করছি।’
এদিকে, ব্যবসায়িক সাফল্যের পাশাপাশি এমিরাটস গ্রুপে কর্মীর সংখ্যাও ১০ শতাংশ বেড়ে রেকর্ড ১ লাখ ১২ হাজার ৪০৬ জনে দাঁড়িয়েছে। একইসঙ্গে, গত আগস্টে এয়ারলাইনের উড়োজাহাজের বহরে ১০টি নতুন এ৩৫০ মডেলের এয়ারবাস যুক্ত হয়েছে।
এছাড়া, বোয়িংয়ের কয়েকটি উড়োজাহাজও বহরে যুক্ত হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। আপাতত, মার্কিন এ উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি নিরাপত্তা সংক্রান্ত সমস্যা মোকাবেলা করছে। ফলে, উড়োজাহাজগুলোর জন্য অপেক্ষায় রয়েছে এমিরাটস এয়ারলাইন।
এদিকে, করোনা মহামারি পরবর্তী ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে এর আল মাকতুম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিসর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় দুবাই। গত মাসে এর নতুন টার্মিনাল নির্মাণের কাজ শুরু হয়। এর মধ্য দিয়ে বিমানবন্দরটির যাত্রী ধারণ ক্ষমতা বছরে ২৬০ মিলিয়নে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়।
নতুন এ টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়ার মধ্য দিয়ে এমিরাটস গ্রুপ কাতারের হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকেও চ্যালেঞ্জ করেছে। কাতারের রাজধানী দোহায় অবস্থিত এ বিমানবন্দরটি আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিমানবন্দরগুলোর মধ্যে অন্যতম।
উল্লেখ্য, পশ্চিম এশিয়ার মধ্যপ্রাচ্যের সাতটি দেশ নিয়ে গঠিত ইউনাইটেড আরব এমিরাটস (ইউএই)। এর অন্যতম প্রধান একটি দেশ দুবাই।
সূত্র : ডয়চে ভেলে।