যুক্তরাষ্ট্র থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিলো ‘বডি শপ’
কানাডায় বন্ধ হচ্ছে ডজনের বেশি দোকান
অর্থ ও বাণিজ্য ডেস্ক
প্রকাশিত: ২২:০৫, ১৩ মার্চ ২০২৪; আপডেট: ১১:৪৭, ১৪ মার্চ ২০২৪
যুক্তরাষ্ট্রে এক সময় ছিলো বডি শপের দোকানগুলোর আধিপত্য। ছবিটি গত ডিসেম্বরে দেশটির ভারমন্ট অঙ্গরাজ্যের বার্লিংটন থেকে তোলা।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে তাদের ব্যবসা পুরোপুরি গুটিয়ে নিলো জনপ্রিয় কসমেটিকস ব্র্যান্ড বডি শপ। এছাড়া কানাডায় থাকা তাদের বেশ কয়েকটি দোকানও বন্ধ করে দিতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক এ প্রতিষ্ঠানটি। দেউলিয়া হয়ে যাওয়ায় প্রতিষ্ঠানটি এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয় বলে জানা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রে থাকা বডি শপের সব দোকান ১ মার্চ থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। চলতি মাসের প্রথম দিকে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় প্রতিষ্ঠানটি। একইসঙ্গে কানাডায় থাকা এর ১০৫টি দোকানের মধ্যে ৩৩টি খুব শিগগিরই বন্ধ করে দেওয়া হবে বলেও এতে উল্লেখ করা হয়।
এছাড়া দেশটির ই-কমার্স স্টোরের মাধ্যমে চলমান অনলাইন বিক্রিও বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। তবে কানাডায় অবস্থিত বডি শপের অন্যান্য দোকানগুলো আপাতত চালু থাকবে বলে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশে দেশে বিদ্যমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি এ ধরনের নামীদামী প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসায় ব্যাপকভাবে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এক সময় বডি শপের মতো ব্র্যান্ড পশ্চিমের এসব দেশগুলোর বিপনিবিতানগুলোতে আধিপত্য করতো। কিন্তু মূল্যস্ফীতি মধ্যবিত্তের ক্রয় ক্ষমতা সীমিত করায় এর প্রভাব পড়ে এসব প্রতিষ্ঠানের উপর।
যুক্তরাজ্যে ১৯৭৬ সালে মানবাধিকার কর্মী ও পরিবেশবাদী অ্যানিতা রড্ডিক বডি শপ প্রতিষ্ঠা করেন। প্রাকৃতিক, উপকারী ও মানসম্মত হওয়ায় প্রথম থেকেই এ প্রতিষ্ঠানের পণ্য ছিলো ক্রেতাদের পছন্দের শীর্ষে।
এছাড়া এটিই ছিলো সে সময়কার প্রথম কোনো প্রতিষ্ঠান যারা গবেষণাগারে প্রাণীর উপর তাদের পণ্যের পরীক্ষা চালানো থেকে বিরত থাকে। ব্যবসার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও পরিবেশ সংরক্ষণ সংক্রান্ত নির্দিষ্ট নীতিমালা মেনে চলায় ২০১৯ সালে বডি শপকে সম্মানজনক ‘বি কর্প’ সনদ দেওয়া হয়।
২০২৩ সাল পর্যন্ত বিশ্বের ৮০টিরও বেশি দেশে ২ হাজার ৫০০ এরও বেশি দোকান ছিলো প্রতিষ্ঠানটির। এছাড়া অনলাইনের প্রায় ৬০টি প্ল্যাটফর্মে এই ব্র্যান্ডের পণ্য বিক্রি হতো। কিন্তু করোনা মহামারির পর থেকেই ধীরে ধীরে বডি শপের ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করে।
এর ধারাবাহিকতায় ২০২২ সালে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবসা প্রায় ১৩ দশমিক ৫ শতাংশ সংকুচিত হয়। এ অবস্থায় গত বছর অরিলিয়াস নামের একটি সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানের কাছে তাদের ব্যবসা বিক্রি করে দেয় বডি শপ।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০০৬ সালে বিলিয়ন ডলারের বেশি দামে বডি শপ কিনে নেয় বিশ্বের আরেক শীর্ষ কসমেটিকস ব্র্যান্ড ল’রিয়েল। পরে ২০১৭ সালে এটি কিনে নেয় ব্রাজিলের নাতুরা নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু সম্প্রতি এ প্রতিষ্ঠানটির অধীনেই ব্যবসায় লোকসানের মধ্যে পড়ে বডি শপ।
সূত্র :সিএনএন।