পর্যটক আকর্ষণে ভ্রমণ ব্যয় কমালো ভুটান
অর্থ ও বাণিজ্য ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৩:১৪, ২৭ আগস্ট ২০২৩; আপডেট: ১০:১৮, ২৮ আগস্ট ২০২৩
ভুটানের মনোমুগ্ধকর প্রকৃতি পর্যটকদের বড় আকর্ষণ।
ভুটান পর্যটকদের জন্য ভ্রমণ ব্যয় কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নতুন এ সিদ্ধান্তে দেশটির পর্যটন ফি কমিয়ে অর্ধেক করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে প্রতি পর্যটকের জন্য দৈনিক ভ্রমণ ব্যয়ের পরিমাণ আগের ২০০ ডলার থেকে কমিয়ে ১০০ ডলার করা হলো।
নতুন নির্ধারিত এ ফি আগামী সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হবে এবং পরবর্তী চার বছর বহাল থাকবে। গত শুক্রবার এক সরকারি বিবৃতিতে এসব সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এ সিদ্ধান্ত পর্যটন খাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বৈদেশিক মুদ্রা আয় এবং সর্বোপরি দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
মূলত করোনা মহামারির ধাক্কা সামলে উঠতেই নতুন এ সিদ্ধান্ত নিলো ভুটান। এর মধ্য দিয়ে পর্যটক আকর্ষণ সম্ভব হবে বলে আশা করছে দেশটি।
তবে এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বরে ‘টেকসই উন্নয়ন ফি’ নামের এ ব্যয়ের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছিলো। সে সময় জনপ্রতি ভ্রমণ ব্যয়ের পরিমাণ দৈনিক ৬৫ ডলার থেকে বাড়িয়ে ২০০ ডলার করা হয়।
মূলত করোনা মহামারির জন্য চলা দুই বছরের বিধিনিষেধ তুলে দেওয়ার পর পরই এ সিদ্ধান্ত নেয় ভুটান। তখন এ অর্থ অতিরিক্ত কার্বণ নিঃসরণ কমানোর কাজে ব্যবহৃত হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিলো।
দেশটিতে প্রচুর পর্যটক সমাগমের কারণে অতিরিক্ত কার্বণ নিঃসরণ হয় বলে সে সময় জানানো হয়।
তবে এখন আবার পর্যটন ফি অর্ধেক করার কারণে সেপ্টেম্বর-ডিসেম্বর সময়কালে পর্যটক আসার হার অনেক বাড়বে বলে ভুটানের পর্যটন শাখার মহাপরিচালক দর্জি ধ্রাধুল আশা প্রকাশ করেন।
কারণ এ সময়টিই মূলত পর্যটকরা ভ্রমণের জন্য বেছে নেয়। তাছাড়া বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠের এ দেশে এ সময় প্রচুর ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক উৎসব থাকে বলে পর্যটক বাড়বে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
তবে এর আগে গত জুনেও একবার পর্যটন ব্যয় কমানো হয়। একইসঙ্গে পর্যটকদের অবস্থানের সময়কাল সংক্রান্ত নিয়মকানুনেও কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু তারপরও পর্যটকের হার আশানুরুপ বাড়েনি।
উল্লেখ্য, বহু যুগ বাইরের পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন থাকার পর ১৯৭৪ সালে প্রথম পর্যটকদের জন্য নিজেদের দরজা খুলে দেয় ভুটান। সে সময় ৩০০ পর্যটক দেশটি ভ্রমণ করে।
পরবর্তীতে তা বাড়তে বাড়তে ২০১৯ সালে এসে এ সংখ্যা পৌঁছায় ৩ লাখ ১৫ হাজার ৬০০ জনে। এটি এর আগের বছরের তুলনায় ১৫ দশমিক ১ শতাংশ বেশি বলে দেশটির সরকারি সূত্রে জানা যায়।
তবে ভুটান বরাবরই অতিরিক্ত পর্যটক আগমনের বিষয়টি নিয়ে সতর্ক থাকে। এমনকি হিমালয়ের চূড়ার পবিত্রতা রক্ষার উদ্দেশ্যে পর্যটকদের পাহাড়ে উঠার উপরেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
এ কারণে দেশটিতে পর্যটকের পরিমাণও প্রতিবেশী নেপাল থেকে তুলনামূলক অনেক কম থাকে।
তবে এতো সীমাবদ্ধতার পরও পর্যটন খাত দেশটির ৩০০ কোটি ডলারের অর্থনীতিতে ২০ শতাংশ অবদান রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। বর্তমানে এ হার ৫ শতাংশ।
বর্তমানে ভুটানের পর্যটন খাতে প্রায় ৫০ হাজার কর্মী রয়েছে। করোনা মহামারির তিন বছর সময়কালের আগে এসব কর্মীর মোট বাৎসরিক আয় ছিলো বৈদেশিক মুদ্রায় ৮ কোটি ৪ লাখ ডলার।
সূত্র : সিএনএন।