বাংলাদেশ-ইইউ অংশীদারিত্ব নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে : প্রধানমন্ত্রী
বেলজিয়াম সফর
স্বদেশ ডেস্ক
প্রকাশিত: ২২:৪৭, ৩১ অক্টোবর ২০২৩; আপডেট: ২৩:০৮, ৩১ অক্টোবর ২০২৩
এ সফরের মধ্য দিয়ে বেলজিয়াম ও লুক্সেমবার্গের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে বলে প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।
বেলজিয়াম সফরের মধ্য দিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে বাংলাদেশের অংশীদারিত্ব নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ মঙ্গলবার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
ইইউ-এর উদ্যোগে প্রথমবারের মতো আয়োজিত গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামে যোগ দিতে গত ২৪-২৬ অক্টোবর বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলস সফর করেন প্রধানমন্ত্রী। এই সফর সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরতে রাজধানীতে আজ এ সংবাদ সম্মলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘গ্লোবাল গেটওয়ের আওতায় বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি, সংযোগ, শিক্ষা ও গবেষণা, ডিজিটাল অবকাঠামো এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম উৎপাদনে বিনিয়োগের সুযোগের নতুন দ্বার উন্মুক্ত হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার সফরের মাধ্যমে আমি আশাবাদী যে বেলজিয়াম ও লুক্সেমবার্গের সাথে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর হবে এবং সহযোগিতার ক্ষেত্র সম্প্রসারিত হবে।’
এদিকে এ সফরের প্রথমদিন বাংলাদেশ সরকার, ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক এবং ইউরোপীয় কমিশনের মধ্যে বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে ৪৭৭ মিলিয়ন ইউরোর কয়েকটি ঋণ সহায়তা এবং অনুদান চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান।
এ সময় ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট, ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক-এর ভাইস-প্রেসিডেন্ট উপস্থিত ছিলেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
স্বাক্ষরিত চুক্তিগুলির মধ্যে ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক-এর সঙ্গে ৩৫০ মিলিয়ন ইউরোর ঋণ সহায়তা চুক্তি, ইউরোপিয়ান কমিশনের সঙ্গে ৪৫ মিলিয়ন ইউরোর বিনিয়োগ ও কারিগরি সহায়তা অনুদান এবং ১২ মিলিয়ন ইউরোর সবুজ জ্বালানি বিষয়ক অনুদান চুক্তি উল্লেখযোগ্য।
এসবের পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকার এবং ইউরোপীয় কমিশনের মধ্যে বাংলাদেশের সামাজিক খাতে ৭০ মিলিয়ন ইউরোর পাঁচটি আলাদা অনুদান চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
সফরের দ্বিতীয় দিন প্রধানমন্ত্রী বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার ডি ক্রো-র সঙ্গে তার কার্যালয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
এ বৈঠকে তিনি কোভিড-১৯ এবং ইউক্রেন যুদ্ধজনিত অর্থনৈতিক অভিঘাত বিবেচনায় চলমান বাণিজ্য সুবিধা 'এলডিসি উত্তরণ' পরবর্তী ৩ বছরের পরিবর্তে ৬ বছরের জন্য অব্যাহত রাখার বিষয়ে সহযোগিতার অনুরোধ জানান বলে উল্লেখ করেন।
একইসঙ্গে পরবর্তী ধাপে বাংলাদেশকে জিএসপি+ বাণিজ্য সুবিধা প্রদানের অনুরোধ জানানো হয়েছে বলেও প্রধানমন্ত্রী এ সময় জানান।
এছাড়া বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা বিশেষ করে বিনিয়োগ সুবিধা তুলে ধরে তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্রসমূহকে বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি, আইসিটিসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন।
সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লুক্সেমবার্গের প্রধানমন্ত্রী জিভিয়ার বেটেল-এর সঙ্গে তার হোটেল স্যুইটে দ্বিপাক্ষিক বেঠক করেন বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
এ সময় তারা দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতামূলক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপ করেন বলে জানা যায়।
উল্লেখ্য, ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েনের আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী এ ফোরামে যোগ দেন। এতে পররাষ্ট্র ও তথ্যমন্ত্রীসহ আরও বেশ কয়েকজন সরকারী কর্মকর্তা প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী ছিলেন।
সূত্র : বাসস।